Tuesday, August 6, 2013

আগামী নির্বাচনে তুরুপের তাস হেফাজত: যুগশঙ্খ

বাংলাদেশে সেক্যুলারদের বিপরীতে ইসলামের র‌্যাডিক্যাল ধারা হেফাজতে ইসলাম খুবই শক্তিশালী হয়ে উঠছে। মৌলবাদী এই সংগঠনটির অধীনে বাংলাদেশের সব মৌলবাদী এখন ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন। হেফাজতে ইসলামই আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনে তুরুপের তাস হিসেবে কাজ করবে। যা শেখ হাসিনা সরকারের পতনের মূল কারণ হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তারা বলছেন, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পাঁচ সিটি নির্বাচনে বিরোধীদের বিপুল ভোটের জয়ে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। মঙ্গলবার আসামের প্রভাবশালী পত্রিকা যুগশঙ্খ সিলচর সংস্করণের এক প্রতিবেদনে এসব কথা জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হিসেবে কাজ করবে। ২০১৪ সালের হেফাজতে ইসলাম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে হাজির হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন। বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক কট্টর মুসলিমকে নিয়ে এই দলটি গঠিত। দলটির প্রধান আল্লাম শফী তাদের তৎপরতা রাজনৈতিক নয় দাবি করে বলেন, আমরা রাজনীতিতে আগ্রহী নই। আমাদের লক্ষ্য মহৎ। আমরা বিশেষভাবে ধর্ম নিয়েই কাজ করি। হেফাজতের জনসমর্থন সম্পর্কে তেমন ধারণা না থাকলেও গত ৫ মে সংগঠনটি তাদের শক্তি প্রদর্শন করে। শাহবাগের অসাম্প্রদায়িক আন্দোলনের বিরুদ্ধে এবং ১৩ দফা দাবিতে ওই দিন তারা ঢাকা অবরোধ করে। ওই সময় কমপক্ষে পাঁচ লাখ লোক ঢাকায় জড়ো হয়ে সহিংসতা চালায়। যুগশঙ্খ জানায়, জনসমক্ষে নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা নিষিদ্ধ, সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের বিষয়টি পুনর্বহালের দাবিসহ ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে এই সমাবেশ করেছিল সংগঠনটি। এতে দিনভর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের অন্তত ৫০ জন নিহত হন। যদিও হেফাজত ও বিরোধীরা এ ঘটনায় সহস্রাধিক নিহতের দাবি করেন। ওই দিন গ্রেফতার হন কয়েক হাজার নেতাকর্মী। বাংলাদেশে মৌলবাদী জামায়াতে ইসলামী প্রধান ইসলামী দল হলেও তাদের পরেই হেফাজতের ইসলামের অবস্থান। যদিও শাসক দলের দাবি জামায়াতই হেফাজতের নামে তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি নীরবে শক্তি সংগ্রহ করেছে, যা নিয়ে শেখ হাসিনা সরকার এখন মারাত্মকভাবে উদ্বিগ্ন। হেফাজত প্রধান আহমদ শফীর চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশের কয়েক হাজার কওমি মাদ্রাসার লাখ লাখ শিক্ষার্থী এই দলটির মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছেন, যারা আগামী নির্বাচনে বড় শক্তি হিসেবে কাজ করবেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষক ফরহাদ মাজহার বলেন, হেফাজত বাংলাদেশের গ্রামে বসবাস করা স্বল্প শিক্ষিত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। শহরের মধ্যবিত্তদের কাছে তারা অবজ্ঞার পাত্র। তাদের আন্দোলনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বা সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর কোনো সম্পর্কে নেই। তবে তাদের পাশ কাটিয়ে গেলে এক সময় তারা আরো চরম হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশের ক্ষমতায় যেতে ইসলামপন্থীরা সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। হেফাজতের প্রভাবের কথা স্মরণ করে ঢাকার এক শিক্ষাবিদ বলেছেন, আপনি ইসলামপন্থীদের সমর্থন ছাড়া জিততে পারবেন, কিন্তু তাদের বিরোধিতার মুখে জিততে পারবেন না।

No comments:

Post a Comment