বাড্ডার শাহাদাৎ হোসেনের সৌজন্যে প্রচার করা হয়েছে। ঢাকা-১৭ (গুলশান-ক্যান্টনমেন্ট) আসনের সর্বস্তরের জনগণকে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে হাজার হাজার পোস্টার ছেপে লাগিয়েছেন গুলশান থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াকিল উদ্দিন। পোস্টারে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি ছোট করে ছাপলেও নিজের নাম বেশ বড় করেই ছেপেছেন। একই সঙ্গে জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে গুলশান আওয়ামী লীগ-যুবলীগের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম হৃদয় একটি পোস্টার ছেপেছেন। জাতীয় শোক দিবস সামনে রেখে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রচারিত পোস্টারের হুবহু নকল। সেখানে সৌজন্যে তার নাম ব্যবহার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, জাতীয় শোক দিবসে আমরা শোকাহত, মর্মাহত। ঢাকা-১১ আসনের সর্বস্তরের জনগণকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে পোস্টার ও ফেস্টুন দিয়েছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব। ওই পোস্টারের সৌজন্যে রয়েছেন তেজগাঁও ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডের যুবদল সাধারণ সস্পাদক জালাল উদ্দিন মোল্লা। বাড্ডা ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শাহীন। পেশায় একজন ডিশ ব্যবসায়ী। এ পর্যন্ত শতাধিক পোস্টার ছাপিয়ে তা প্রচার করেছেন এলাকায়। পোস্টারে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুমের ছবিও ব্যবহার করেছেন। মিরপুর-
একাধিক খুলনায় হত্যা মামলার আসামি চরমপন্থি দলের সদস্য শেখ সাঈদুর রহমান ওরফে টেংকি শাওন বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ ফজলুল হক মনির ছবি সংবলিত প্যানা বোর্ড দিয়েছে খুলনার অলিগলিতে। সাঈদুর রহমান ওরফে শাওন হত্যা করে লাশ ট্যাংকিতে লুকিয়ে রাখায় পর তার নাম ট্যাংকি শাওন হিসেবে পরিচিতি পায়। ১৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী যুবলীগের সংগ্রামী যুব নেতা পরিচয়ে প্যানা বোর্ড দিয়েছে ট্যাংকি শাওন। স্কুলছাত্র হত্যার তালিকাভুক্ত আসামি এ শাওন।
আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শহিদ ইকবাল বিথার হত্যা মামলার পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতা মেজবাহ হোসেন বুরুজ। যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ার পর শেখ ফজলুল করিম সেলিমকে একটি অনুষ্ঠানে ফুলের তোড়া দেন। শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সঙ্গে ওই ফুলের তোড়া সংবলিত ছবি দিয়ে প্যানা বোর্ড করে তা খুলনায় ঈদ শুভেচ্ছায় প্রচার করেছেন বুরুজ। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার আন্তঃজেলা ডাকাত দলের শীর্ষ নেতার ভাই একাধিক মামলার আসামি দাউদ খালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি বিতর্কিত শহিদুল ইসলামও বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি সংবলিত পোস্টার বের করে ঈদ শুভেচ্ছা দিয়েছে। একই এলাকার ঢাকার জমির দালাল ইউপি বিএনপির সভাপতি ইউসুফ তালুকদার শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রহুল আমীন দুলালের ছবি ব্যবহার করে ব্যানারের মাধ্যমে এলাকাবাসীকে ঈদ শুভেচ্ছা দিয়েছে।
শুধু চঞ্চল, ট্যাংকি শাওন কিংবা বুরুজরা নয় সারা দেশে রয়েছে এ রকম শ’ শ’ চঞ্চল, ট্যাংকি শাওন। তারা নিজেদের আখের গোছানোর ধান্ধায় ব্যবহার করছে জাতীয় নেতাদের নাম ও ছবি। তবে এদের বাইরে অনেকেই দলকে ভালবেসে পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট বা প্রচারপত্র বিলি করছেন। তবে এ সংখ্যা খুবই কম। আর এ প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এরপর আছেন বিএনপির জাতীয় পার্টির নেতাকর্মী। বাংলাদেশে জাতীয় নেতাদের নিয়ে ব্যানার-পোস্টারের এমন রমরমা হলেও চলতি বছরের শুরুর দিকে ভারতের সমাজবাদী পার্টি সিদ্ধান্ত নেয় হাইকমান্ডের অনুমোদন ছাড়া কেউ পার্টিপ্রধানের ছবি কিংবা পার্টির লোগো ব্যবহার করে কোন পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট বা কোন প্রকার প্রচারপত্র বিলি করতে পারবে না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী এম কে আনোয়ার বলেন, দলের অনুমোদন ছাড়া পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট বা কোন প্রকার প্রচারপত্র বিলি করা অনৈতিক। তবে এতে দলের খুব একটা ক্ষতি হয় না। তিনি মনে করেন, যেসব জায়গায় দলের মধ্যে গ্রুপিং থাকে সেসব জায়গায় এ ধরনের পোস্টার প্রচার বেশি হয়। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নূহ আলম লেলিন বলেন, যাদের এসব পোস্টার বা ব্যানার দেয়ার অনুমোদন আছে তারাও করে আর যাদের অনুমোদন নেই অর্থাৎ বিতর্কিত তারাও করে। ডিজিটাল যুগে পোস্টার বা ব্যানারে ছবি দিতে পাঁচ থেকে দশ মিনিট সময় লাগে। তিনি বলেন, আমরা এসব বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।
No comments:
Post a Comment