শাহবাগের
মোড়ে চলছে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় গাঁথা নিয়ে ছবির প্রদর্শনী। সেই
প্রদর্শনীতে দেখানো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ছবি। অথচ তার ঠিক ২০০ গজ দূরে
মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম আজ মরতে বসেছেন। টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না
তার। আবার তার ওপরের তলায় সব চিকিৎসার সুবিধা নিচ্ছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে
দণ্ডিত গোলাম আযম।
মুক্তিযোদ্ধা
আবুল হাশেম নেত্রকোনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার।
পাকসেনাদের কাছে কখনও মাথা নত করেননি তিনি। যখন সুস্থ ছিলেন ভরাট কণ্ঠে
সন্তানদের বলেছেন তার বীরগাঁথা ইতিহাস, কিভাবে গায়েল করেছেন শত্রুপক্ষকে।
তিনি বলেন, ‘…বৃষ্টির মতো গুলি করছিল পাইক্কারা…বন্ধুর ছিন্ন মস্তক দেখে
আগুন ধরে গিয়েছিল মাথায়, হাতের মেশিনগানটা তুলে নিয়ে “জয় বাংলা” বলে
পাগলের মতো দাঁড়িয়ে থেকে গুলি করতে থাকি… একটু পর দেখি সব ঠাণ্ডা।’
একসময় যে মানুষটি ছিল বাঘের মানবরূপ, সেই মানুষটিকে আজ মাথা নত করতে
হয়েছে ফুসফুসে ক্যান্সারের কাছে।
প্রায়
দু’মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন
ব্লক বিল্ডিংয়ের ৪০২ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। আর তার
ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে পরিবার আজ নিঃস্ব। তাকে সুস্থ থাকার
জন্য প্রয়োজন ২০ লাখ টাকা। যা যোগাড় করা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।
তাই এই স্বাধীন বাংলায় বেঁচে থাকতে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম সরকার ও দেশের মানুষের কাছে আর্থিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
তার
ছেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমরান আহমেদ আক্ষেপ করে বাংলামেইলকে
বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালের যে কক্ষটিতে আজ আমার বাবা শুয়ে আছেন
তার ঠিক ওপরেই রাজার হালতে আছেন রাজাকার গোলাম আযম। অথচ আমার বাবা টাকার
অভাবে মরতে বসেছেন। তিনিই আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
আমাদের যা ছিল বাবার চিকিৎসার পেছনেই শেষ।
No comments:
Post a Comment