ইফতারিতে মুড়ির সঙ্গে বিষ খাচ্ছে মানুষ। লাল-নীল রঙের বিশাল ড্রামে অথবা
বালতিতে রাখা সোড়া ও ইউরিয়া সার মিশ্রিত পানি চালে মিশিয়ে মুড়ি ভাজা হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের নারান্দিয়ার ৫টি মুড়ির মিলে এভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে মুড়ি।
মিলের প্রত্যেকটি মেশিনের সাহায্যে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪৫-৫০ বস্তা চালের
মুড়ি ভাজা হচ্ছে। ৫০ কেজি চালের ১ বস্তায় ৪৪-৪৫ কেজি মুড়ি হয়, যা ৪০-৫০
টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই হিসেবে নারান্দিয়ার মিলগুলো থেকে
প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ লাখ টাকার মুড়ি উৎপাদন ও বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু মিলে
মেশিনের সাহায্যে এই বিপুল পরিমাণ মুড়ি তৈরিতে প্রকাশ্যেই ব্যবহার করা
হচ্ছে খোলা লবণ, সোডা, ইউরিয়া সারসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য। অপরিচ্ছন্ন
পরিবেশে রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে তৈরি মুড়ি মানবদেহের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর।
নারান্দিয়া ইউনিয়নের নগরবাড়িতে অবস্থিত সুনীল মোদকের লোকনাথ মুড়ির মিলে
দেখা গেছে লাল ও নীল রঙের বিশাল আকৃতির ড্রাম ও বালতির মধ্যে সোডা ও ইউরিয়া
সার মিশ্রিত পানি। এসব সার মিশ্রিত পানি চালের মধ্যে মিশিয়ে মেশিনের
সাহায্যে মুড়ি তৈরি করা হয়। মুড়ি সাদা, বড়, চকচকে ও আকর্ষণীয় করতেই এসব
রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া মুড়ি ভাজার পর ঘরের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে
স্তূপ করে রাখা হয় এবং শ্রমিকরা ঘাম-ময়লাযুক্ত শরীরে বস্তা ভর্তি করে। এটা
শুধু লোকনাথ মুড়ির মিলের দৃশ্য নয়, নারান্দিয়া বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে
অবস্থিত সততা মুড়ির মিলসহ অধিকাংশ মিলের একই দৃশ্য। তবে লোকনাথ মুড়ি মিলের
মালিক সুনীল মোদক ও সততা মুড়ি মিলের মালিক শংকর মোদক সার মেশানোর কথা
অস্বীকার করেন। টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ ইবনে সাঈদ
বলেন, সোডা ও ইউরিয়া সারযুক্ত মুড়ি খেলে মানবদেহের লিভার, কিডনি, হার্টসহ
খাদ্যনালীতে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন এই মুড়ি খেলে
মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক
আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, মুড়িতে যদি সার মেশানো হয় তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া
হবে। আমি কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলে দিচ্ছি।
No comments:
Post a Comment