Wednesday, July 31, 2013

ভোটারদের ‘গুডবুকে’ নেই ১৬ মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. আ ফ ম রুহুল হকের আসনকে পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়েছে সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার জরিপ প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মীর দূরত্ব রয়েছে। আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি মন্ত্রীর কর্মকাণ্ড সেই অর্থে ভোটারদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেনি। বরং নির্বাচনী এলাকায় এমন গুঞ্জনও রয়েছে যে রুহুল হক আগামীতে নির্বাচনে অংশ না-ও নিতে পারেন। ঢাকা টাইমস২৪ এর অনুসন্ধানে গোয়েন্দা জরিপের এসব তথ্য জানা গেছে। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্যে বারবার যোগাযোগ করা হলেও স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে পাওয়া যায়নি।
জাতীয় সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর আসনকেও আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য প্রতিকূল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ফরিদপুর-২(নগরকান্দা-সালথা) আসনে আওয়ামী লীগের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতা-কর্মী বিরূপ হয়ে আছেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যা ঢাকা টাইমস২৪ এর অনুসন্ধানে জানা গেছে। জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মেজর (অব.) আ ত ম হালিমসহ প্রভাবশালী আরও কয়েকজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা আগামী নির্বাচনে বড়সড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠবেন। আর তারা একযোগে সাজেদা চৌধুরীর বিরোধিতায় নামলে ফলাফল অনূকুলে আসবেনা বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
আগামী নির্বাচনে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) এনামুল হকের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র ঢাকা টাইমস২৪.কমকে জানায়, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে নেই। আগামী নির্বাচনে চাপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ এই প্রতিমন্ত্রীকে একহাত দেখে নেওয়ার অপেক্ষায় আছেন এসব নেতা-কর্মীরা। পাশাপাশি ভোটারদের উল্লেখযোগ্য অংশও মনে করেন, কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন হয়নি। ফলে ভোটারদের বেশিভাগের মধ্যে বিকল্প ভাবনা কাজ করছে।
যোগাযোগ করা হলে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীকে পাওয়া যায়নি। তবে চাপাইনবাবগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মঈনুদ্দিন মণ্ডল ঢাকা টাইমস২৪.কমকে বলেন, এনামুল হক ভবিষ্যতে নির্বাচনে হারবেন এটা আমরা জানি। তাই গোয়েন্দা সংস্থা যদি এ রকম কোন রিপোর্ট দিয়ে থাকে তা শতভাগ সঠিক।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শাজাহান মিয়ার পক্ষে আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করা কঠিন হবে বলে জরিপ প্রতিবেদনে আভাস দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো ঢাকা টাইমস২৪.কমকে জানায়, পটুয়াখালী-১ নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী পুত্রদের অযাচিত হস্তক্ষেপ, স্থানীয় আওয়ামী লীগে বিভক্তি ইতিমধ্যেই ভোটারদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। পরবর্তী নির্বাচনে ফলাফল অনুকূলে আনা ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে কঠিন হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীকে পাওয়া যায়নি। তবে তাঁর ছেলে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তারিকুজ্জামান মনি ঢাকা টাইমস২৪.কমকে বলেন, আগামী নির্বাচনে তাঁরা অনায়াসে জিতবেন। জরিপ প্রতিবেদন কী বলা হল আর হলনা এনিয়ে তাঁরা চিন্তিত নন।
জরিপ প্রতিবেদনে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদের অবস্থানও নির্বাচনী এলাকায় নড়বড়ে বলে জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। যশোর-২ নির্বাচনী এলাকায় দলের মধ্যে মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী আছেন। তিনি সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। পাশাপাশি মোস্তফা ফারুক সেই অর্থে আমজনতার মন জয় করতে পারেননি। এলাকার উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁর ভূমিকা আরও যথার্থ হতে পারত বলে ভোটারদের বেশিরভাগ মনে করেন। সব মিলিয়ে ভোটারদের মধ্যে তাঁর সম্পর্কে খুব বেশি ইতিবাচক ধারণা গড়ে ওঠেনি। ফলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া ‘ভদ্রলোক’ মোস্তফা ফারুক মোহাম্মদের জন্য কষ্টকর হবে বলে জরিপ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাসও খানিকটা পিছিয়ে আছেন বলে জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়, গতবারের নির্বাচনে অল্পভোটে বিজয়ী মন্ত্রীর বেশকিছু বদনাম হয়েছে। তাঁর এপিএস ও কিছু ঘনিষ্ট সহচরের আর্থিকভাবে ফুলেফেঁপে ওঠাকে এলাকার ভোটারেরা নেতিবাচকভাবে নিচ্ছেন। আগামী ভোটে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
যোগাযোগ করা হলে মৎস ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রী আবদুল লতিফ বিশ্বাস ঢাকা টাইমস২৪.কমকে বলেন, আমি মন্ত্রী হয়ে এলাকার যে উন্নয়ন করেছি বিগত ৩৫ বছরে সেই উন্নয়ন হয়নি। মন্ত্রী বলেন, ‘আমি হোপফুল হোপলেস নই’। আবদুল লতিফ বিশ্বাস আরও বলেন, এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি। মানুষই বিচার করবেন। ভালো করলে ভোট দেবেন। আর না করলে দেবেন না।
শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রী রাজিউদ্দীন রাজুও ঝুঁকির মধ্যে আছেন। নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে নরসিংদী পৌরসভার প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের অনুগামীরা আগামী নির্বাচনে রাজিউদ্দীন রাজুর প্রকাশ্য বিরোধিতায় নামবেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজিউদ্দীন রাজুর এক ধরনের নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে বলে জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়।
ঢাকা টাইমস২৪.কম এর পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে মন্ত্রী রাজিউদ্দন রাজু কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের পরবর্তী নির্বাচনী ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। খুলনা-৩ আসনে পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হলে প্রতিমন্ত্রীকে ভোটারদের নানা নেতিবাচক প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। কিছু আত্মীয়-স্বজনের কর্মকাণ্ডও প্রতিমন্ত্রীকে ভোগাতে পারে বলে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন।
যোগাযোগ করা হলে শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ঢাকা টাইমস২৪.কমকে বলেন, তিনি আগামী নির্বাচনে জিতবেন এই বিশ্বাস তাঁর আছে। কোন জরিপ প্রতিবেদন কী বলছে তা তিনি জানেন না এবং এ বিষয়ে তাঁর কোন আগ্রহ নেই।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ও আগামী নির্বাচনে ভাল করার সম্ভাবনা কম বলে সংশ্লিষ্ট জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি, গৃহায়ণ ও গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রী মান্নান খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী আহাদ আলী সরকার, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী ওমর ফারুক চৌধুরীর অবস্থাও নড়বড়ে বলে জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
পানি সম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, সংস্কৃতি মন্ত্রী আবুল কালাম আজাদও নির্বাচনী এলাকায় অস্বস্তিতে আছেন। আর তিনজন প্রভাবশালী মন্ত্রী আর দুই জন প্রতিমন্ত্রীর অবস্থাও নড়বড়ে বলে জরিপ প্রতিবেদন সূত্রে ঢাকা টাইমস২৪.কম এর কাছে খবর আছে।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের দু’জন গুরুত্বপূর্ণ নীতিনির্ধারক আলাপকালে বলেন, একাধিক জরিপ প্রতিবেদনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী-সাংসদের ব্যাপারে নেতিবাচক প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। ব্যক্তিগতভাবে তাদের সঙ্গে দলের সভানেত্রীসহ অন্য নীতিনির্ধারকরা কথা বলছেন। সম্ভাব্য খারাপ ফলাফল সামাল যাতে দেওয়া যায় সেই চেষ্টা চলছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ এসব বিষয়ে ঢাকা টাইমস২৪ কে বলেন, গোটা প্রতিবেদন আমাদের হাতে নেই। তবে এসব বিষয় অনেকটা আমাদের জানা। তৃণমূলের অনেক খবরই আমাদের কাছে আছে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ নেতার আসনের অবস্থা ভালনা এমন খবর আসছে। ঈদের পরে তৃনমূল স্তরের নেতাদের নিয়ে আমরা বসব। এরপর তাদের মতামতের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত হবে।

Tuesday, July 30, 2013

ইফতারিতে মুড়ির সঙ্গে বিষ খাচ্ছে মানুষ।

ইফতারিতে মুড়ির সঙ্গে বিষ খাচ্ছে মানুষ। লাল-নীল রঙের বিশাল ড্রামে অথবা বালতিতে রাখা সোড়া ও ইউরিয়া সার মিশ্রিত পানি চালে মিশিয়ে মুড়ি ভাজা হচ্ছে। টাঙ্গাইলের নারান্দিয়ার ৫টি মুড়ির মিলে এভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে মুড়ি। মিলের প্রত্যেকটি মেশিনের সাহায্যে প্রতিদিন কমপক্ষে ৪৫-৫০ বস্তা চালের মুড়ি ভাজা হচ্ছে। ৫০ কেজি চালের ১ বস্তায় ৪৪-৪৫ কেজি মুড়ি হয়, যা ৪০-৫০ টাকা পাইকারি দরে বিক্রি হচ্ছে। এই হিসেবে নারান্দিয়ার মিলগুলো থেকে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৪ লাখ টাকার মুড়ি উৎপাদন ও বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু মিলে মেশিনের সাহায্যে এই বিপুল পরিমাণ মুড়ি তৈরিতে প্রকাশ্যেই ব্যবহার করা হচ্ছে খোলা লবণ, সোডা, ইউরিয়া সারসহ ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে রাসায়নিক দ্রব্য মিশিয়ে তৈরি মুড়ি মানবদেহের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। নারান্দিয়া ইউনিয়নের নগরবাড়িতে অবস্থিত সুনীল মোদকের লোকনাথ মুড়ির মিলে দেখা গেছে লাল ও নীল রঙের বিশাল আকৃতির ড্রাম ও বালতির মধ্যে সোডা ও ইউরিয়া সার মিশ্রিত পানি। এসব সার মিশ্রিত পানি চালের মধ্যে মিশিয়ে মেশিনের সাহায্যে মুড়ি তৈরি করা হয়। মুড়ি সাদা, বড়, চকচকে ও আকর্ষণীয় করতেই এসব রাসায়নিক ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া মুড়ি ভাজার পর ঘরের অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে স্তূপ করে রাখা হয় এবং শ্রমিকরা ঘাম-ময়লাযুক্ত শরীরে বস্তা ভর্তি করে। এটা শুধু লোকনাথ মুড়ির মিলের দৃশ্য নয়, নারান্দিয়া বাসস্ট্যান্ডের পশ্চিম পাশে অবস্থিত সততা মুড়ির মিলসহ অধিকাংশ মিলের একই দৃশ্য। তবে লোকনাথ মুড়ি মিলের মালিক সুনীল মোদক ও সততা মুড়ি মিলের মালিক শংকর মোদক সার মেশানোর কথা অস্বীকার করেন। টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ ইবনে সাঈদ বলেন, সোডা ও ইউরিয়া সারযুক্ত মুড়ি খেলে মানবদেহের লিভার, কিডনি, হার্টসহ খাদ্যনালীতে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে। দীর্ঘদিন এই মুড়ি খেলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, মুড়িতে যদি সার মেশানো হয় তবে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বলে দিচ্ছি।

The murder of the leader of the attackers CC cameras(সিসি ক্যামেরায় যুবলীগ নেতার খুনের দৃশ্য)

যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন খান ওরফে মিল্কি গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে গাড়ি থেকে নেমে সবেমাত্র দাঁড়িয়েছেন। হঠাৎ পেছন থেকে সাদা পাঞ্জাবি পরা ঘাতক ছুটে আসেন। ঘাতক বাঁ হাতে মুঠোফোন কানে দিয়ে কথা বলছিলেন আর ডানহাতে পিস্তল দিয়ে একের পর এক গুলি করে যাচ্ছিলেন। শপার্স ওয়ার্ল্ডের সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে এ দৃশ্য। র‌্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, এই ঘাতকের নাম জাহিদ সিদ্দিকী তারেক। রিয়াজের পরিবারের সদস্যরা জানান, তারেক নিহত রিয়াজের ছোটবেলার বন্ধু। তাঁরা দুজন একসঙ্গে বড় হয়েছেন মতিঝিলের এজিবি কলোনির বাসায়।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ডের সামনে গাড়ি থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই গুলি করেন তারেক। এ সময় কালো রঙের পাঞ্জাবি পরা ছিলেন রিয়াজ। হেঁটে শপার্স ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ পথের দিকে যাওয়ার পরপরই বাঁ কানে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে রিয়াজের সামনে দাঁড়ান ওই ঘাতক, যাঁর মাথায় ছিল সাদা টুপি, গায়ে সাদা রঙের পাঞ্জাবি। রিয়াজের সঙ্গে কোনো কথাও বলেননি ঘাতক। মুঠোফোনে কথা বলতে বলতেই রিয়াজকে একের পর এক গুলি ছুড়তে থাকেন। গুলিবিদ্ধ রিয়াজের দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। গুলি করার দৃশ্য দেখেও রিয়াজকে বাঁচাতে বা ঘাতককে ধরতে আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন এগিয়ে যাননি। রিয়াজ মাটিতে পড়ার পরও দমে যাননি হত্যাকারীরা। বরং মৃত্যু নিশ্চিত করে লাল রঙের মোটর সাইকেলে চড়ে আরও একজন এগিয়ে যান রিয়াজের দিকে। মাটিতে পড়ে থাকা রিয়াজকে আরও কটি গুলি করেন। তবে একটি গুলি সাদা পাঞ্জাবি পরা প্রথম ঘাতকের শরীরে লেগে যায়। এরপর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে লাল রঙের ওই মোটরসাইকেলে উঠে বাধাহীনভাবে পালিয়ে যান ঘাতকেরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রিয়াজের এক আত্মীয় প্রথম আলো ডটকমকে জানান, ঈদ উপলক্ষে আগে কেনা বাচ্চাদের পোশাক বদলাতে গত রাতে শপার্স ওয়ার্ল্ডে গিয়েছিলেন রিয়াজ। সাগরের প্রাইভেট কারে চড়ে মোহাম্মদপুরে নিজ বাসা থেকে গুলশান যান রিয়াজ। সাগরকে তিনি ভাগনে বলে ডাকতেন।
র‌্যাব-১ এর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আজ মঙ্গলবার ভোর দুইটা থেকে চারটা পর্যন্ত রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে রিয়াজ হত্যার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাঁরা হলেন এইচ এম জাহিদ সিদ্দিকী তারেক (৩৫), তুহিনুর রহমান (২৫), সৈয়দ মোস্তফা আলী রুমি (৩৩), মোহাম্মদ রাসেদ মাহামুদ (২৫), সাইদুল ইসলাম নুরুজ্জামান (২২) ও মোহাম্মদ সুজন হাওলাদার (২২)। মূল আসামি জাহিদকে রাজধানীর উত্তরার ফরচুন হসপিটাল থেকে আটক করা হয়েছে।
র‌্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান বিকেলে প্রথম আলো ডটকমকে জানান, আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় প্রথম আলো ডটকমকে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, এখনো মামলা হয়নি। তবে মামলা হবে।’
এর আগে আজ সকালে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ কোনো কোন্দলের কথা আমার জানা নেই। বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে। তারাই প্রকৃত ঘটনা উদ্ধার করবে। আমরা এখন শোকে মুহ্যমান। এ বিষয়ে পরে কথা বলব।’

 English
Organising Secretary in the southern city of attackers riyajauddina aka Milky gulasane saparsa worlds just in front of the car down from the stands. I just came back from a killer wearing white Punjabi. The left ear with a cell phone in the hands of the executioner balachilena danahate was a pistol with one shot. Saparsa worlds CC cameras caught the scene. According to RAB, the name of the killer Fabric Zahid said. The family said Riaz, Riaz childhood friend killed Fabric. The two have been together a long ejibi Motijheel Colony home.Dibagata yesterday at one of the worlds Gulshan saparsa shift from cars immediately in front of the Fabric. Riaz was wearing at the time of its black color. Enter the path to the left ear after walking saparsa World muthophone talk Riaz stand in front of the killer, who was the head of a white hat, white color on Punjabi. Riaz has also asked the executioner. Muthophone talk balatei riyajake are churate one shot. Riaz was shot lutiye body to the ground. Riyajake to overlook shot the scene to save the people standing around to catch ghatakake been ahead. Have Riaz sagging to the ground after the assassins. We are in the red riding motor cycles also suggest a move toward. Riyajake fall to the ground in many of the categories. The Punjabi wearing a white shot of the killer body can take. He hobbled up the red color of the motorcycle fled ghatakera badhahinabhabe.Riaz told a relative he was reluctant to release, on the occasion of Eid before buying children's clothing change at the last World saparsa Riaz said. Private car riding home from the sea, mohammadapure go Gulshan Riaz. Bhagane sagarake the call.-1 Is the press release said today from two till four o'clock Tuesday morning in the capital murder related charges chayajanake Riaz to continue operations in the area have been detained. The Fabric of the HM Zahid Siddiqui (35), tuhinura in (25), Syed Mustafa Ali Rumi (33), the raseda mahamuda (25), Saidul Islam nurujjamana (22) and the HOWLADER quickly switch between users (22). The accused have been detained in hospital jahidake Fortune Uttara in the capital.Wing Commander RAB director of media studies, Habibur Rahman told the afternoon, the legal process against detainees.The day I first told the chayataya Gulshan police officer (OC) Rafiqul Islam said, still not the case. It will be the case. 'Earlier this morning, the City of South attackers Ismail said he told the president, 'but I did not know the no kondalera. Police are investigating the matter. They will retrieve the actual events. We muhyamana mourning. After the talk. '

মানব-সদৃশ মহিষের শাবক।

থাইল্যান্ডে মানব শিশুর আকৃতির বাচ্চা প্রসব করেছে একটি বিস্ময়কর মহিষ। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

থাইল্যান্ডের সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, মহিষের সদ্যজাত বাচ্চাটিকে মনুষ্য শিশুর মতোই পাটিতে রাখা হয়েছে। শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ খানিকটা মানুষের মতো মনে হলেও মুখাবয়ব একেবারেই মানুষের আকৃতির। অবশ্য হাত-পা’র আকৃতিতে খানিকটা মহিষের সাদৃশ্য আছে। কিন্তু সবদিক থেকে মহিষের বাচ্চাটিকে মানুষের আকৃতিরই মনে হচ্ছে।

সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, ভূমিষ্ট হওয়ার পরপরই বাচ্চাটি মারা যায়।

স্থানীয় বাসিন্দারা এই বিস্ময়কর ঘটনাকে সৌভাগ্যের প্রতীক অলৌকিক ঘটনা ধরে নিয়ে মঙ্গলের জন্য প্রার্থনা-অর্চনা শুরু করেছেন। 


English

Thailand is in the shape of a human baby, child labor has been a wonderful mahisa. In this incident, the locals were inconstancy.

Thailand's press release can be seen in the film, mahisera child born as a human baby is patite. Other organs of the body - the organs somewhat like that, but the shape of the face. The hands - legs in shape somewhat similar to mahisera. Try to think of it mahisera akrtirai of the child.

News media said, after the child died bhumista.

Local residents of this wonderful symbol of riches story of the miracle of prayer for the welfare - have started to worship.

গোলাম আযমের নিচেই মরতে বসেছেন মুক্তিযোদ্ধা

শাহবাগের মোড়ে চলছে মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয় গাঁথা নিয়ে ছবির প্রদর্শনী। সেই প্রদর্শনীতে দেখানো হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের ছবি। অথচ তার ঠিক ২০০ গজ দূরে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম আজ মরতে বসেছেন। টাকার অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না তার। আবার তার ওপরের তলায় সব চিকিৎসার সুবিধা নিচ্ছেন মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত গোলাম আযম।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম নেত্রকোনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার। পাকসেনাদের কাছে কখনও মাথা নত করেননি তিনি। যখন সুস্থ ছিলেন ভরাট কণ্ঠে সন্তানদের বলেছেন তার বীরগাঁথা ইতিহাস, কিভাবে গায়েল করেছেন শত্রুপক্ষকে। তিনি বলেন, ‘…বৃষ্টির মতো গুলি করছিল পাইক্কারা…বন্ধুর ছিন্ন মস্তক দেখে আগুন ধরে গিয়েছিল মাথায়, হাতের মেশিনগানটা তুলে নিয়ে “জয় বাংলা” বলে পাগলের মতো দাঁড়িয়ে থেকে গুলি করতে থাকি… একটু পর দেখি সব ঠাণ্ডা।’ একসময় যে মানুষটি ছিল বাঘের মানবরূপ, সেই মানুষটিকে আজ মাথা নত করতে হয়েছে ফুসফুসে ক্যান্সারের কাছে।
প্রায় দু’মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের কেবিন ব্লক বিল্ডিংয়ের ৪০২ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। আর তার ব্যয়বহুল চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে পরিবার আজ নিঃস্ব। তাকে সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন ২০ লাখ টাকা। যা যোগাড় করা পরিবারের পক্ষে অসম্ভব।
তাই এই স্বাধীন বাংলায় বেঁচে থাকতে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেম সরকার ও দেশের মানুষের কাছে আর্থিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
তার ছেলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমরান আহমেদ আক্ষেপ করে বাংলামেইলকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মেডিকেল হাসপাতালের যে কক্ষটিতে আজ আমার বাবা শুয়ে আছেন তার ঠিক ওপরেই রাজার হালতে আছেন রাজাকার গোলাম আযম। অথচ আমার বাবা টাকার অভাবে মরতে বসেছেন। তিনিই আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আমাদের যা ছিল বাবার চিকিৎসার পেছনেই শেষ।

Saturday, July 27, 2013

খালি হাতেই ঢাকা ফিরছেন দীপু মণি

বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে কার্যত খালি হাতেই কাল দেশে ফিরছেন বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি।
ঢাকা ভাল করেই জানে যে স্থলসীমান্ত চুক্তি ভারতীয় সংসদে পাশ করানোর প্রকৃত চাবিকাঠি রয়েছে বিজেপি নেতৃত্বের হাতে। সেই অনুযায়ী আজ রাজ্যসভার প্রধান বিরোধী নেতা অরুণ জেটলির সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করলেন দীপু মণি। কিন্তু বরফ গলল না। দীপু মণির আবেদনে আজ ইতিবাচক সাড়া দেননি জেটলি। শুধু বলেছেন, দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে জানাবেন।
পাশাপাশি আজ প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন দীপু মণি। ইফতার সেরেছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদের সঙ্গে। সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হলেও স্বাভাবিক ভাবেই মুখ্য বিষয় ছিল তিস্তা এবং স্থলসীমান্ত চুক্তি। কিন্তু তিস্তার জল গড়ায়নি, সীমান্ত নিয়েও জট ছাড়ার কোনও ইঙ্গিত মেলেনি।
জেটলি-দীপু মণি বৈঠকের পর বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, যদিও এটি বিদেশনীতির বিষয় এবং তাঁরা বাংলাদেশ-বিরোধীও নন, তবুও সীমান্ত চুক্তির প্রশ্নে সরকারের আনা বিলটিকে সমর্থন করার সম্ভাবনা অদূর ভবিষ্যতে নেই। বিজেপি-র এক নেতার কথায়, “বাংলাদেশের ভোট তো আমাদের উদ্বেগের বিষয় হতে পারে না!”

বৈঠকের পর দীপু মণি অবশ্য জানিয়েছেন যে তিনি আশাবাদী যে ভারত দ্রুত তাদের ‘অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া’ শেষ করবে। ভারতের জনপ্রতিনিধিদের প্রতি তাঁর আহ্বান, গত সাড়ে চার বছরে দু’দেশের মধ্যে যে অগ্রগতির সুফল পাওয়া গিয়েছে, এ বার তার ভিতের উপর দাঁড়িয়ে তাঁরা কিছু করে দেখান। তাঁর কথায়, “জেটলির সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নে তাঁর দলের সমর্থন রয়েছে। ভারতীয় সংসদে স্থলসীমান্ত চুক্তি সমর্থন করার জন্য আমি জেটলিকে অনুরোধ করেছি। তিনি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলে তার পর জানাবেন।”
বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়-সূত্র সীমান্ত চুক্তি এবং তিস্তা দু’টি বিষয় নিয়েই মুখ খুলেছে। সুত্রের বক্তব্য, “স্থলসীমান্ত চুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং দীপু মণির কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই বিলটিকে আসন্ন বর্ষাকালীন অধিবেশনে সংসদে পেশ করা হবে।” পাশাপাশি তিস্তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সূত্রের বক্তব্য, “বাংলাদেশের বিদেশমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে যে ভারত সরকার এ বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা। তিস্তা নিয়ে দু’দেশ তথ্য-পরিসংখ্যান ভাগ করে নিচ্ছে।”
বৈঠকের পর আজ কিছুটা হতাশা ছিল দীপু মণির গলায়। এই দু’টি চুক্তি ফলপ্রসূ না হলে বাংলাদেশের নিবার্চনে কি তার প্রভাব পড়বে না? এই প্রশ্নের উত্তরে বিদেশমন্ত্রী জানিয়েছেন, “চুক্তিগুলি সম্পন্ন না হলে তা অবশ্যই হতাশাজনক হবে। তার পরিণামও দেশে পড়তে পারে। কিন্তু মানুষ তো দেখেছেন যে আগের সরকার এই বিষয়গুলিতে আদৌ উদ্যোগীই হয়নি। এগুলি তো আজকের বিষয় নয়, দশকের পর দশক জুড়ে ঝুলে রয়েছে। হাসিনা সরকার যে এই চুক্তিগুলির একেবারে অন্তিম পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, আশা করি সেটা এখন সবাই বুঝবেন।’’
নৈশভোজেও বিষয়গুলি নিয়ে সলমন খুরশিদেরও সঙ্গে কথা হয়েছে দীপু মণির। দীপু বললেন, “গণতন্ত্রে এটা সর্বত্রই দেখা যায়, যে কোনও বিষয় নিয়ে বিভিন্ন বিরুদ্ধ মত তৈরি হচ্ছে। আবার এমন এক একটা সময় আসে, যখন জাতীয় স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ক্ষুদ্র স্বার্থকে ঝেড়ে উঠে দাঁড়াতে হয় আমাদের। আশা করব ভারতের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা সেটা করবেন।”

http://www.anandabazar.com/27bdesh2.html
পুরনো খবর:

Wednesday, July 24, 2013

মৃত ঘোষনার পর দাফনের মাগফিরাত কামনার সময় নড়েচড়ে উঠল জরিনা বেগম

মৃত ঘোষণার ৪ দিন পর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফিরেছে আড়াইহাজারের গাজীপুরা গ্রামের মৃত: আফাজউদ্দীনের স্ত্রী জরিনা বেগম (৬৫)। গতকাল দুপুরে উপজেলা সদরের সেন্ট্রাল হাসপাতালে এই ঘটনাটি ঘটে।

হাসপাতাল ও জরিনার পরিবার জানায়, বৃহস্পতিবার দুপুর অনুমান দেড়টায় জরিনা বেগম নিজ ঘরে একটি আলমারী থেকে মুরগির ডিম তুলতে গেলে আলমারিটি তার ওপর পড়ে গিয়ে তিনি মারাত্মক আহত হন। তাকে সঙ্গে সঙ্গে  উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হলে ডাক্তার তাকে ঢাকায় রেফার্ড করেন। রোগীর স্বজনরা তাকে ঢাকা না নিয়ে আড়াইহাজারের বেসরকারি হাসপাতাল  সেন্ট্রালে নিয়ে চিকিৎসা দিয়ে রোগীকে সুস্থ করে বাড়িতে পাঠানো হয়। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। শনিবার তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। এবারেও ডাক্তার তার চিকিৎসা না করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পর তার জ্ঞান না ফেরায় চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বাড়িতে এনে কিছু লোক বাঁশ কাটায় এবং কিছু লোক জরিনার জন্য কবর খুঁড়তে লেগে যায়। মৃত ব্যক্তির মাগফিরাত কামনা করে  রোগীর এক মেয়ে লাশের সামনে বসে সুরা ইয়াছিন পড়তে থাকে। হঠাৎ করে কিছুক্ষণ পর মৃত ব্যক্তি নড়াচড়া শুরু করেন। ফলে সবাই চমকে  যান। এ সময়  তিনি জীবিত আছেন ভেবে তাকে শনিবার রাতে আবার সেন্ট্রাল হাসপাতালে এনে ভর্তি করানো হয়।

এখানে ৪ দিন চিকিৎসা শেষে গতকাল বুধবার দুপুরে তিনি একেবারে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান। এ ধরনের অলৌকিক ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এই বিষয়ে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইউসুফ বলেন, অনেক সময় রোগীর শিরা বন্ধ হয়ে গেলে মারা গেছে বলে মনে হয়। যদি সময় নিয়ে দেখা হতো তবে এমনটি হতো না।

Sunday, July 21, 2013

হেফাজতকে বাগে আনতে সরকারের দৌড়ঝাঁপ .....

৫০ আসনসহ লোভনীয় বহু অফার : মামলা তুলে নেয়া ও ক্ষতিপূরণ দানের প্রস্তাব : কথা না শুনলে ভবিষ্যতে দেখে নেয়ার হুমকি
ইনকিলাব রিপোর্ট : হেফাজতকে নিয়ে সরকার ইদানীং খুব নাক সিটকালেও হেফাজত যে তাদের ‘হাতে না পাওয়া টক আঙ্গুর’ সে কথা ধীরে ধীরে প্রকাশ পাচ্ছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, হেফাজত দেশে সন্ত্রাস করছে। সরকারের পক্ষ থেকে হেফাজতকে সন্ত্রাসী সংগঠন আখ্যা দিয়ে দেশ-বিদেশে প্রচারণাও চালানো হচ্ছে। মহাজোটের এক শীর্ষ নেতা এ বলে মন্তব্য করেছেন যে, সরকারের এক চামচা মন্ত্রী হেফাজতকে রাজধানীতে ডেকে এনেছিলেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশে শীর্ষস্থানীয় আলেম-উলামা, পীর-মাশায়েখের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের কর্মসূচিতে হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফীসহ প্রায় সকল শীর্ষনেতার সাথেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণভবনে একাধিকবার বৈঠক ও মতবিনিময় করেছেন। সম্প্রতি আল্লামা শফীর কথিত একটি ভিডিওর কিছু বক্তব্য নিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী সংসদে তার তীব্র সমালোচনা করেন। এর আগে গণভবনের এক অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী আল্লামা শফী সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেন। হেফাজত নেতৃবৃন্দ এসব মন্তব্যকে অশোভন ও কুরুচিপূর্ণ আখ্যায়িত করে সংবাদপত্রে বিবৃতি দিয়েছেন। সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেতাকে আল্লামা আহমদ শফীর সঙ্গ ত্যাগ করার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। হেফাজতের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের উত্থান হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। সরকারি উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী এ প্রচারণাও চালানো হচ্ছে যে, হেফাজত একটি মৌলবাদী সংগঠন, যারা তালিবানী রাষ্ট্র কায়েম করতে চায়। তাছাড়া, ৫ মে শাপলা চত্বরে সরকার পরিচালিত নৃশংসতাকে যুক্তিযুক্ত প্রমাণ করার প্রয়াসও সরকারি বহিঃপ্রচার কার্যক্রমের লক্ষণীয় দিক।


যদিও হেফাজতের মাদরাসা শিক্ষিত আলেম-ওলামা, মুফতি, ইমাম, পীর-মাশায়েখ ও ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতা একান্ত নিরীহ নাগরিক, যারা কেবল ধর্মীয় দাবি-দাওয়া নিয়ে অরাজনৈতিক ঈমানী আন্দোলনের ব্যানারে রাজধানীতে সমবেত হয়েছিলেন। শাপলা চত্বরেই তাদের সমবেত হওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকার অনুমোদন চেয়েও তারা সেটা পাননি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর নিয়ন্ত্রণাধীন সে এলাকাটিতেই সংঘটিত হয় নজিরবিহীন তা-ব। যেখানে হেফাজত লাখ লাখ লোকের সমাবেশ করে সেখানে কিছুই হয়নি। যেখানে হেফাজতকে সমাবেশের অনুমতি না দিয়ে এলাকাটি ফাঁকা রাখা হয়েছে সেখানেই দিনব্যাপী হেফাজতের নেতাকর্মীদের পৈশাচিক উপায়ে হত্যাসহ নানাবিধ তা-ব সংঘটিত হয়েছে। বর্তমানে অতীতে দেশে সংঘটিত সকল ধরনের জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর ও বিশৃঙ্খলার ছবি সংযুক্ত করে হেফাজতের তা-ব বলে দেশে-বিদেশে ছড়ানো হচ্ছে। অথচ হেফাজতের সূচনালগ্ন থেকে আজও পর্যন্ত এ সংগঠনটির সাথে সরকারের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মতামত ব্যক্ত করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে জনৈক রাজনৈতিক নেতা ইনকিলাবকে বলেন, ৫ মে শাপলা চত্বরে সম্মিলিত বাহিনীর নৃশংসতা শুরুর পূর্ব মুহূর্তেও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আল্লামা শফীর সাথে মন্ত্রী ও নেতারা যোগাযোগ করেন। তাদের দেয়া শর্ত মেনে না নেয়ার ফলেই রাতের শেষ প্রহরে বাতি নিভিয়ে নিরীহ নিষ্পাপ আলেম-ওলামা ও তৌহিদী জনতার উপর নির্মম অত্যাচার চালানো হয়। যারা প্রায় সবাই ক্লান্ত ক্ষুধার্ত ও ঘুমন্ত ছিলেন। এর আগে ৪ এপ্রিল সারাদিন এবং গভীর রাত পর্যন্তও হেফাজত কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা যোগাযোগ রক্ষা করে চলে, এমনকি মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে সরকারের প্রস্তাব মেনে নেয়ার শেষ সময়সীমাও বেঁধে দেয়া হয়।
হাটহাজারি থেকে একাধিক সূত্র জানায়, হেফাজতের সাথে সমঝোতার সব চেষ্টাই করেছিল সরকার। মহাজোটে শামিল করে নিয়ে ৫০টি আসনে জিতিয়ে আনার অফারও দেয়া হয় হেফাজত নেতাদের। অরাজনৈতিক এ দ্বীনি সংগঠনকে ক্ষমতার ভাগ দিয়ে হলেও সরকার চেয়েছিল জনমত সপক্ষে ধরে রাখতে। সরকারের এসব প্রস্তাব মেনে না নেয়ার ফলেই নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী জানান, নানা সময়ে সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা আল্লামা শফীর কাছে ছুটে এসেছেন। তারা ৫০টি আসন দিতে চেয়েছেন। ১৩ দফার অনেকগুলো দাবিও মেনে নিতে সম্মত হয়েছেন। কিন্তু এখন আমাদের সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে। আল্লামা শফীর কথা আগে এত ভাল লাগতো আর হঠাৎ করেই তার কথাবার্তা এখন ‘জঘন্য’, ‘নোংরা’ ও ‘অশালীন’ হয়ে গেল। সরকারের এ দ্বিমুখী আচরণ দেখে সারাদেশের হেফাজত নেতাকর্মীরা হতভম্ব। সরকারের দ্বৈত ভূমিকায় বিস্মিত আল্লামা শফীও। হেফাজত আমিরের প্রেস সেক্রেটারি মাওলানা মুনির আহমদ বলেন, একটি ভিডিও টেপ নিয়ে সরকার গত ক’দিন যে আচরণটি করল, এর কোন নজির কোথাও পাওয়া যাবে কী? ডিজিটাল কারসাজি ও জালিয়াতি করে একজন বর্ষীয়ান আলেমকে অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করার মাধ্যমে সরকার কী পাবে? সরকার আল্লামা শফীকে তার প্রতিপক্ষ মনে করছে কেন? হেফাজত তো কোন রাজনৈতিক দল নয়, হেফাজত তো নির্বাচনও করবে না। নেতা-মন্ত্রীরা তো হেফাজতের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। ৫ মে তারা কী মনে করে হেফাজতকে নির্মমভাবে দমন করলেন। এরপরও তাদের মন ভরল না। অহেতুক হুজুরকে অশালীন ভাষায় দলবল নিয়ে গালমন্দ করলেন। আর কী করতে চান তারা?
হেফাজতে ইসলামের নেতারা জানান, গত ৩১ মার্চ সরকারের সাথে হেফাজতের সমঝোতা প্রস্তাব নিয়ে হাটহাজারি মাদরাসায় আল্লামা শফীর দফতরে আসেন ড. হাছান মাহমুদ। তার সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর আওয়ামী লীগের আবদুস সালাম। তারা আল্লামা শফীর শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন এবং সরকারের সঙ্গে দূরত্ব কমানোর প্রস্তাব পেশ করেন। এক ঘণ্টারও অধিক সময়ব্যাপী বৈঠক চলাকালে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘হুজুর আপনার বয়স হয়েছে। এই বয়সে কেন এত ঝামেলা মাথায় নেবেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রীও আপনাকে ভাল জানেন। তিনিও চান না, আপনাকে নিয়ে টানাহেঁচড়া হোক। তাই সরকারের সঙ্গে বন্ধু হয়ে কাজ করলে উভয়েরই মঙ্গল।’ জবাবে আল্লামা শফী বলেছিলেন, ‘আমি এখন যে অবস্থানে আছি সেখান থেকে সরে আসার কোন সুযোগ নেই। এটা ঈমানের প্রশ্ন। তোমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলে দাও তার সাথে কাজ করতে আমার আপত্তি নেই তবে তিনি যদি আমাদের সব দাবি মেনে নেন।’ মন্ত্রী হাছান মাহমুদ যাওয়ার দু’দিন আগে সরকারের পক্ষ থেকে আল্লামা শফীর সাথে দেখা করতে হাটহাজারি যান চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান ও পুলিশ সুপার হাফিজ আক্তার।
হেফাজতের সাথে সরকারের আচরণের প্রতিফলন দেশে সদ্য অনুষ্ঠিত ৫ সিটি নির্বাচনে স্পষ্ট হওয়ার পর থেকেই হেফাজতের প্রতি সরকারের সম্পর্ক নতুন দিকে মোড় নেয়। সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে সরকার বেছে নেয় আহমদ শফীকে বদনাম করার পন্থা। শুরু হয় আলেম-ওলামা ও মাদরাসা শিক্ষার বিরুদ্ধে বিষোদ্গার। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হেফাজতের সাথে সরকারের প্রতিটি আচরণের মত বর্তমান আচরণও কেবল তার জনসমর্থনই কমাবে। কারণ, মানুষ হেফাজতকে সরকারের প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতালোভী সংগঠন মনে করে না। দাবি মানানো ছাড়া হেফাজতের আর কোন এজেন্ডা নেই।
এটি একটি ঈমানী গণআন্দোলন। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের শুরুটাও ছিল খুবই সাদামাটা। দেশের সর্বপ্রাচীন বৃহৎ কওমী মাদরাসা দারুল উলুম হাটহাজারির আলেমরা সংবিধান থেকে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দেয়ার প্রতিবাদে গঠন করেন হেফাজতে ইসলাম। এরপর নারীনীতি ও শিক্ষানীতির ইসলামবিরোধী ভাবধারার প্রতিবাদেও সোচ্চার হয় হেফাজতে ইসলাম। কওমী ধারার আলেমদের ডাকে হেফাজতের শুরুটা ছিল অনেকটাই গতানুগতিক। কিন্তু সারাদেশে নানা কারণে সংক্ষুব্ধ মানুষ এর আহ্বানে সংহত হওয়ার গোয়েন্দা রিপোর্ট হাতে পেয়ে সরকার হেফাজতের বিষয়ে সতর্ক হয় এবং সংগঠনটির উত্থান রুখতে নানা কৌশল অবলম্বন করে। চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে হেফাজতের প্রথম গণসমাবেশ প- করতে সরকার প্রশাসন, পুলিশসহ রাজনৈতিক ক্যাডারদের এতই নগ্নভাবে কাজে লাগায় যা দেখে হেফাজত নেতাকর্মীরা নিজেদের আন্দোলনের গুরুত্ব ও প্রভাব সম্পর্কে আরো অধিক আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠে। শুরুর দিকে চট্টগ্রামের সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর নিজ আসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী শেখ আবদুল্লাহ হেফাজত নেতাদের সাথে যোগাযোগের দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় চট্টগ্রামের পুলিশ কমিশনার ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা হেফাজতকে বাধাগ্রস্ত করতে নানাভাবে চেষ্টা করেন। হেফাজতের অন্যতম নেতা পটিয়া মাদরাসার মুহতামিম মুফতি আবদুল হালিম বোখারী সরকারি চাপেই হেফাজত থেকে দূরে সরে যান। এ সময় আরেক নেতা মাওলানা সুলতান জওকের সাথে পুলিশ কমিশনারের কথোপকথন মোবাইলে রেকর্ড করে তাকেও নিজ অনুসারীদের মাঝে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়। পুলিশ কর্মকর্তাটিই এই রেকর্ড করেন এবং অন্যদের শুনিয়ে হেফাজত ভাঙার চেষ্টা চালান। কিন্তু সংবিধানে আল্লাহর উপর আস্থা ও বিশ্বাস তুলে দেয়া নিয়ে যে আন্দোলনের সূচনা, কোন কৌশল চক্রান্ত বাধা বা প্রচেষ্টাতেই তা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়নি। আর এটাই ছিল স্বাভাবিক। হাজারো বাধা উপেক্ষা করে যেমন এটি এখনো টিকে আছে এবং দিন দিন জোরদার হচ্ছে।
চট্টগ্রামের একটি মহাসমাবেশে যাওয়ার পথে শহরের নাসিরাবাদ এলাকায় পুলিশি বাধা এবং সন্ত্রাসীদের প্রচ- গোলাগুলির মুখেও হেফাজত নেতাকর্মীদের অবিচল অবস্থান তখন সরকার, গোয়েন্দা সংস্থা ও গণমাধ্যমকে হতবাক করে দেয়। এ পর্যায়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে হেফাজত-প্রধান আল্লামা আহমদ শফীসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের গ্রেফতারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু হাটহাজারি মাদরাসার মুহতামিম, কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, বর্ষীয়ান আলেমে দ্বীন, শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফীকে গ্রেফতার করার প্রতিক্রিয়া যে কত মারাত্মক হতে পারে তা আন্দাজ করতে পেরেই ঢাকা থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম পুলিশকে এ চিন্তা বাদ দিতে বলেন। তখন চট্টগ্রাম পুলিশের বড় কর্তারা হাটহাজারি গিয়েও খালি হাতে ফিরে আসেন। এরপর হেফাজত ও এর আমির আল্লামা আহমদ শফীর পুরো বিষয়টি সামাল দেয়ার দায়িত্ব বিশেষভাবে অর্পণ করা হয় ফটিকছড়ির এমপি, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের উপর। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আস্থাভাজন খ্যাত এই মন্ত্রী দেশের লাখো আলেমের ওস্তাদ ও তৌহিদী জনতার ধর্মীয় আধ্যাত্মিক নেতা আল্লামা শফী সম্পর্কে ভাল করে জানেন এবং একান্ত বৈঠকের সময় তাদের দু’জনেই চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন। কিন্তু হাছান মাহমুদ হেফাজতের সাথে তার যোগাযোগ ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আল্লামা শফীকে ম্যানেজ করার দূতিয়ালিতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হন। এজন্য তার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ও আন্তরিকতাহীন দ্বিমুখীনীতিই দায়ী বলে মনে করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামে তার রাজনৈতিক সতীর্থরা। বিশেষ করে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ দায়িত্ব পাওয়ার পর শেখ আবদুল্লাহ ঢাকা ও চট্টগ্রামের হেফাজত নেতাদের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দেন। এ সময় হেফাজতকে ভাঙার জন্য আল্লামা শফীকে বাদ দিয়ে বসুন্ধরা মাদরাসার মুফতী আবদুর রহমানকে দৃশ্যপটে নিয়ে আসার চেষ্টাও করা হয়। হেফাজতের সাথে দ্বিমত পোষণকারী সরকার ঘেঁষা দু’একজন আলেমকে দিয়ে কওমী অঙ্গনে নতুন মেরুকরণের চেষ্টাও চলে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। সিলেট, বরিশাল, খুলনা ও রাজশাহী সিটি নির্বাচনের আগে আগে হেফাজতের কিছু নেতাসহ দেশের শীর্ষ আলেমকে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে মিলিত করার উদ্যোগ নেন হাছান মাহমুদ। কিন্তু ৫ মে ট্রাজেডির ফলে বিক্ষুব্ধ আলেমসমাজ ও তৌহিদী জনতার প্রতিবাদের মুখে দেশের কোন আলেমই গণভবনে যেতে রাজি হননি। গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আগে হেফাজতের সাথে সমঝোতার আরেকটি চেষ্টা নেন মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরপ্রতীক। তখন নেতাদের বিরুদ্ধে করা মামলা তুলে নেয়াসহ বিভিন্ন প্রস্তাব দেন তিনি। কিন্তু আল্লামা শফী তাকেও ঈমানী আন্দোলনের দাবি না মানা পর্যন্ত সরকারের সাথে সমঝোতার কোন সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দেন। এর আগে পরে আল্লামা শফীকে যে কোন ছুঁতোয় গণভবনে আনার বহু চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি তার দাবি না মানা পর্যন্ত কোন আলোচনারই সুযোগ নেই বলে জানিয়ে দেন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আগ্রহে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজি চট্টগ্রাম গিয়ে কয়েকদিন বসে থেকেও হাটহাজারি যাওয়া বা আল্লামা শফীর সাক্ষাত পাওয়ার ক্ষেত্রে সফল হননি। আল্লামা শফী ডিজির অতীত কর্মকা-ে খুবই বিরক্ত। তিনি এমনকি তার চেহারা দেখতেও নারাজ।
এ প্রসঙ্গে কথা হয় হেফাজতের কেন্দ্রীয় সিনিয়র নায়েবে আমির আল্লমা মুহিবুল্লাহ বাবুনগরীর সাথে। তিনি বলেন, ডিজি সামীম আফজাল আন্দরকিল্লায় বসে হেফাজতের বহিষ্কৃত দুই নেতার সাথে বৈঠক করেছেন বলে সংবাদপত্রে দেখেছি। হাটহাজারিতে তিনি এলে সাধারণ মানুষই তাকে প্রতিহত করতো। ৫ মে রাজধানীতে যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে তারা এই ডিজিকে যা খুশি তাই করতে পারতো। বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকার সমস্ত জ্বালাও-পোড়াও আর তা-বের মূল নায়ক নাকি এই ডিজি। হেফাজতের বদনাম করার জন্য এ তা-বের আয়োজন করে এ নিয়ে অপপ্রচার চালানোর কুবুদ্ধি তিনিই নাকি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীও এই ব্যক্তির পরামর্শ গ্রহণ করে আজ এই কঠিন অবস্থার সম্মুখীন। সে তার কর্মদক্ষতা প্রমাণের জন্যই হেফাজতকে ম্যানেজ করার দায়িত্ব নিয়েছে। সরকারি পদ ও র‌্যাব-পুলিশের প্রহরা না থাকলে তৌহিদী জনতাই তাকে ম্যানেজ করে ফেলবে বলে লোকমুখে শুনতে পাই।
হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা আবু সাদ বলেন, প্রকাশ্য ও গোপনে বহু লোক প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে নানা সময়ে আমাদের কাছে এসেছেন। ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েও লোভ-টোপ, হুমকি ও প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে নেত্রীর সাথে সাক্ষাত, ভবিষ্যৎ ক্ষমতার ভাগ, অর্থবিত্ত ইত্যাদি কোনকিছুর প্রতিশ্রুতিই বাদ যায়নি। সময়ে নেতৃবৃন্দ সবই প্রকাশ করবেন। তবে হেফাজতের ঈমানী আন্দোলনকে স্তিমিত করা কারো পক্ষেই সম্ভব হবে না। কারণ, এটি মুসলমানদের বিশ্বাস ও আবেগের সাথে জড়িত। হেফাজতের সাথে সমঝোতার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য বেফাকের অন্যতম সহকারী মহাসচিবকে বার বার চাপ দিয়ে চলেছেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিজির লোকেরা। তিনি অপারগতা প্রকাশ করলে গত সপ্তাহে একজন সরকারদলীয় এমপি তাকে টেলিফোনে হুমকি দিয়ে বলেন, সমঝোতার সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। আবার ক্ষমতায় গেলে হেফাজতকে দেখিয়ে দেয়া হবে। চট্টগ্রামের চকবাজার মসজিদের মাওলানা রহমতুল্লাহ বলেন, আন্দরকিল্লায় কর্মকর্তাদের সভায় ইফা ডিজি বলেছেন, ঢাকার সব আলেম আমার অফিসে এসে পা ধরে মাফ চাইছে। আলেম-ওলামাদের শায়েস্তা করার নিয়ম আমার জানা আছে। তাদের ওষুধ লাঠি। প্রধানমন্ত্রীকে বলে লাঠির ব্যবস্থা করছি। হেফাজতকে লাঠি মেরে সাইজ করা হবে।
সরকারি নানা প্রস্তাব ও সমঝোতার জন্য বহুবার হাটহাজারি মাদরাসায় গিয়েছেন মহাজোটের টিকিটে জাপা মনোনীত সংসদ সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। বিএনপি-জামায়াতকে নকআউট করে দিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি হেফাজতের জোটবদ্ধ নির্বাচন, ৫০টি আসন বরাদ্দসহ ক্ষমতা ভাগাভাগির বহু প্রস্তাব তার মাধ্যমেও গিয়েছে বলে হেফাজত নেতা আলহাজ লোকমান আহমেদ জানান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি শুধু এতটুকু বলেন যে, আমি হাটহাজারির স্থানীয় সংসদ সদস্য। নানা কারণে হুজুরের কাছে যেতেই পারি। সমঝোতা প্রয়াস ও প্রস্তাবাবলী সম্পর্কে প্রশ্ন করলে তিনি কৌশলে এসব এড়িয়ে যান।
হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, হেফাজতের আন্দোলন কাউকে ক্ষমতায় বসানো বা কাউকে ক্ষমতা থেকে নামানোর জন্য নয়। এটি ঈমানী দাবি আদায়ের আন্দোলন। নতুন সরকার আসুক আর বর্তমান সরকারই থাকুক, হেফাজতের আন্দোলনে কোন তারতম্য হবে না। যতদিন ঈমানী দাবি আদায় না হবে ততদিন আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করেই যাবো। যে সরকারই আসুক আমাদের তাতে মাথাব্যথা নেই। যতদিন ইসলাম ও মুসলমান থাকবে ততদিন হেফাজতে ইসলাম থাকবে। সমঝোতায় না এলে বা কথা না শুনলে দেখে নেয়া হবে এ হুমকির বিষয়ে কী ভাবছেন জানতে চাইলে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, নিরীহ নাগরিকদের দেখে নেয়া ক্ষমতাসীনদের কাজ নয়। তাদের কাজ হচ্ছে নাগরিকদের দাবিপূরণ ও সেবা করা। তবে সকল অন্যায় হুমকির মোকাবেলায় আলেম সমাজ ও তৌহিদী-নবীপ্রেমিক জনতার জন্য সর্বশক্তিমান আল্লাহই যথেষ্ট। অতীতের মত তিনি ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের ইসলামপ্রিয় মানুষকে হেফাজত করবেন। মুসলমানের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে হেফাজত করবেন। দেশ, ধর্ম, মহানবী (সা.) মানবতা ও মূল্যবোধের শত্রুরা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

http://www.dailyinqilab.com/details_news.php?id=121822&&%20page_id=%205

Friday, July 19, 2013

হেফাজতে ইসলামকে বিরধীদল মনে করছে সরকার, আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে গীবত একটি খারাপ নজির সৃষ্টি করলো।

মোবায়েদুর রহমান : বাংলাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় বুজুর্গানে দ্বীন হেফাজতে ইসলামের আমীর আধ্যাত্মিক নেতা আল্লামা আহমেদ শফীর বলে কথিত একটি বক্তব্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী আলোচনা, সমালোচনা এবং আক্রমণের ঝড় তুলেছেন। এই আক্রমণের ভাষা যদি হতো শালীন এবং যদি সেটি করা হতো নিয়ম নীতি মেনে তাহলে কারো বলার কিছু ছিল না। কিন্তুু যখন দেখা যায় যে নিয়ম নীতি নৈতিকতার ধার না ধেরে স্বয়ং প্রধান মন্ত্রীও এই আক্রমণের ব্যান্ড ওয়াগনে শরিক হয়েছেন তখন দুঃখ রাখার আর জায়গা থাকে না।
সাংবাদিকতায় এবং বিচার প্রক্রিয়ায় একটি মৌলিক নিয়ম নীতি মানা হয়। সেটি হলো এই যে কারো বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কোনো অভিযোগ উত্থাপন করতে হলে সর্বাগ্রে সেই অভিযোগ সম্পর্কে অভিযুক্ত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করতে হয়। অভিযোগ সম্পর্কে তার কি বক্তব্য, সেটি গ্রহণ করতে হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য গ্রহণ করার পরেও যদি মনে হয় যে অভিযোগের সারবত্তা রয়েছে, একমাত্র তখনই অভিযোগটি প্রকাশ্যে উত্থাপন করা যেতে পারে। অনুরূপভাবে সংবাদ মাধ্যমে অর্থাৎ রেডিও বা টেলিভিশনে কারো সম্পর্কে কোনো অভিযোগ প্রকাশ বা সম্প্রচার করার পূর্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করতে হয় এবং প্রকাশিতব্য অভিযোগ সম্পর্কে তার বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়। আল্লামা শফীর সাথে ওরা যোগাযোগ করেনি
কিন্তুু হেফাজতের আমীর আল্লামা শফীর সাথে অভিযোগকারিরা এসব আনুষ্ঠানিকতা বা ভদ্রতার ধার ধারেনি। চরম পরিতাপের বিষয় হলো এই যে এমন এক সময় আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে যখন তিনি পবিত্র ওমরা পালনের জন্য বেশ কিছুদিন ধরে সউদী আরব রয়েছেন। তথ্য প্রযুক্তির এই বিস্ময়কর উন্নতির যুগে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে অবস্থানরত যে কোনো ব্যক্তির সাথে যোগাযোগ করা মুহূর্তের ব্যাপার মাত্র। দৈনিক ‘ইনকিলাব’ সাংবাদিকতার এই ন্যূনতম নিয়ম নীতি পালন করেছে। আল্লামার সাথে ইনকিলাব সউদী আরবে যোগাযোগ করেছে এবং আল্লামা শফী এইসব অভিযোগ বা সংবাদ অস্বীকার করেছেন এবং আল্লামা শফী এইসব অভিযোগ বা সংবাদ অস্বীকার করেছেন। গত ১৫ই জুলাই দৈনিক ইনকিলাবের প্রথম পৃষ্ঠায় পাঁচ কলামজুড়ে প্রধান সংবাদ হিসেবে যে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে তার শিরোনাম হলো, “এ বক্তব্য আহমদ শফীর নয়/এমন কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানায় না : নাটক সাজিয়ে ইসলামকেই টার্গেট করা হচ্ছে।” প্রথম পৃষ্ঠার ঐ রিপোর্টে বলা হয়েছে, “ওমরা উপলক্ষে সউদী আরব সফররত আল্লামা আহমদ শফীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ব্যক্তিগত সচিবের মাধ্যমে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, তিনি কখনো তার কোনো বক্তৃতার ভিডিও করেননি বা বাজারেও ছাড়েননি। অন্য কেউ বিনা অনুমতিতে ভিডিও করলে এতে সুপার ইম্পোজ করে কথা, ছবি, শব্দ বা দৃশ্য সংযোজন, বিকৃতি বা পরিবর্তন করলে এর দায়িত্ব তার নয়।”


ইনকিলাবের এই রিপোর্টটি ছাপা হওয়ার পরেও অপ প্রচারকারীরা আল্লামার বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়েই যাচ্ছে। দুচারটি প্রাইভেট টেলিভিশন চ্যানেল এই আধ্যাত্মিক নেতাকে জনসমক্ষে, বিশেষ করে নারী সমাজের কাছে, হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য ইউ টিউবে প্রচারিত হওয়ার দোহাই দিচ্ছে। কম্পিউটার বা তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্র্কে যাদের ন্যূনতম জ্ঞানও রয়েছে তারা জানেন যে আধুনিক সফটওয়্যার ব্যবহার করে কারো বক্তব্য পরিবর্তন করা বা কণ্ঠস্বর সুপার ইম্পোজ করা কোনো কঠিন বিষয় নয়। এই রকম প্রতারণার মাধ্যমে ধারণ করা কোনো ভিডিওচিত্র ইউটিউবে আপলোড করা বর্তমান সময়ে কোনো ব্যাপারই নয়। যাই হোক, ইনকিলাব যদি আল্লামার সাথে সউদী আরবে যোগাযোগ করতে পারে তাহলে অন্যান্য গণমাধ্যম তার সাথে যোগাযোগ করে অভিযোগটির সত্য মিথ্যা জেনে নিলো না কেন?
 প্রধানমন্ত্রী কিভাবে এই  অপপ্রচারে যোগ দিলেন?
এসব সত্যাসত্য যাচাই না করে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিভাবে আল্লামা বিরোধী অপপ্রচারের কোরাসে শরিক হলেন? তাও আবার জাতীয় সংসদের ফ্লোরে? শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী। সউদী আরবে বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী ও কার্যকর দূতাবাস রয়েছে। সেই দূতাবাসের মাধ্যমে বর্তমানে সউদী আরবে অবস্থানরত আল্লামা শফীর সাথে যোগাযোগ করা মুহূর্তের ব্যাপার ছিল। দূতাবাসের মাধ্যমে আল্লামার সাথে যোগাযোগের পরেও যদি প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে কনভিন্সড  হতেন যে ঐ ভিডিও ফুটেজটি আল্লামার, তাহলে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সংসদে তার এরকম আক্রমণাত্মক বক্তব্য দেওয়ার যৌক্তিকতা থাকতো। কিছুই না করে তিনি আল্লামার শুধু সমালোচনাই করলেন না, আল্লামা সম্পর্কে এমন সব উক্তি করলেন যেগুলো শুনে বিস্ময়ে হতভম্ব হয়ে মানুষের বাক রুদ্ধ হয়ে যায়। জাতীয় সংসদের সমাপনী বক্তৃতায় তিনি  বলেছেন, “উনার (আহমদ শফীর) বক্তব্য নোংরা এবং জঘন্য। উনার কি মা বোন নেই? উনার কি স্ত্রী নেই? উনি কি মায়ের পেটে জন্মগ্রহণ করেন নি? উনিকি স্ত্রীর মর্যাদা রক্ষা করেন না?
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কিছু দিন পর পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত এক জনসভায় মওলানা ভাসানী বলেছিলেন, আমি প্রেসিডেন্ট, প্রধানমন্ত্রী বা মন্ত্রী নই। আমি সরকারি দলের কোনো এমপিও নই। বিরোধী দলেরও কোনো এমপি নই। আমি হলাম অপোজিশন লিডার। আমার যা মনে হয় তাই বলতে পারি। কিন্তুু প্রধানমন্ত্রী, আপনি সেটা পারেন না। কথা বলার সময় আপনাকে দায়িত্বশীল হতে হবে।
মওলানা ভাসানীর এই কথাটি যে কোনো দেশের রাষ্ট্র প্রধান ও সরকার প্রধানের বেলায় প্রযোজ্য। শেখ হাসিনা যখন বিরোধী দলে থাকেন তখন তিনি অনেক কিছুই বলতে পারেন। বিরোধী দলের নেতা হয়েও আবার পল্টন ময়দানে যে ভাবে কথা বলতে পারেন, জাতীয় সংসদে সেভাবে কথা বলতে পারেন না। তিনি এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এবং অত্যন্ত ক্ষমতাময়ী প্রধানমন্ত্রী। সুতরাং তিনি যা বলবেন সেটি সরকার প্রধানের ঐ সুউচ্চ আসনের সাথে সংগতিপূর্ণ হতে হবে। দু:খের বিষয় হলো এই যে, সেদিন আওয়ামী লীগের আরো কয়েকজন নারী সংসদ সদস্য আল্লামা শফী সম্পর্কে যে কদর্য মন্তব্য করেন যেগুলি রীতিমত গীবতের পর্যায়ে পড়ে। বেবী মওদুদ প্রধানমন্ত্রীর বান্ধবী বলে বাইরের লোক জানে। এটি বেবী মওদুদের জন্য সম্মানের ব্যাপার। সেই বেবী মওদুদ একজন সংসদ সদস্য হয়ে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে আল্লামা শফী সম্পর্কে বলেন, “উনি কি কোনো নারীর গর্ভে জন্ম নিয়েছেন? নাকি পশুর গর্ভে”? বেবী মওদুদ যা বলেছেন সেটি কি কোনো বক্তব্য? নাকি গীবত? এই ধরনের প্রশ্ন তুলে সংসদ সদস্য বেবী মওদুদ নিজের মানও বাড়াননি, অথবা প্রধানমন্ত্রীর মানও বাড়াননি। অন্যান্য সংসদ সদস্যও আল্লামা সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। দু:খের বিষয় হলো এই যে প্রধানমন্ত্রী যেমন এসব বক্তব্যে বাধা দেননি, তেমনি স্পিকার একজন মহিলা হয়েও এসব কুরুচিকর কদর্য বক্তব্য এক্সপাঞ্জ করেননি।
এই বক্তব্য কোথায় কখন দিয়েছেন?
আল্লামা শফী সউদী আরবের পুণ্য ভূমিতে বসে এই বক্তব্য অস্বীকার করেছেন। এখন যারা এই অভিযোগ তুলেছেন সেটি তাদেরকেই প্রমাণ করতে হবে। কবে কখন কোথায় আল্লামা এই বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি প্রমাণের দায়িত্ব অভিযোগ কারীদের। যদি তারা সমস্ত প্রশ্ন এবং সন্দেহের ঊর্ধ্বে এই অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারেন তাহলে এই অপরাধের দায়-দায়িত্বই শুধু তাদের ঘাড়েই বর্তাবেনা, অনাবশ্যকভাবে প্রধান মন্ত্রীকে জড়ানোর দায়িত্বও তাদের ঘাড়ে পড়বে।
ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয় :
মন্ত্রীত্ব প্রধানমন্ত্রী ইত্যাদি চিরস্থায়ী নয়। জীবন ক্ষণস্থায়ী। প্রতিটি মানুষকেই একদিন পরপারে যেতে হবে। এই জীবনের গুনাহ্ খাতার পুরস্কার বা শাস্তি আসবে ঐ জীবনে। ক্ষমতার সুরক্ষিত দূর্গে থেকে আজ কিছু বললেও ঐ দুনিয়ায়  ক্ষমতার দূর্গ কোনো কাজে আসবে না। তাই আহমদ শফীর মত একজন আধ্যাত্মিক নেতা এবং বুজুর্গানে দ্বীনের চরিত্র হননের সময় ছোট বড় নির্বিশেষে সকলে যদি  জাগতিক স্বার্থের বাইরে মানবতা এবং পরকালের বিষয়টি বিবেচনায় আনেন তাহলে সেটি সকলের জন্যই মঙ্গলজনক হবে।
http://www.dailyinqilab.com/details_news.php?id=121298&&%20page_id=%205

Thursday, July 18, 2013

Dipu Moni 's world record(দীপু মনি’র বিশ্বরেকর্ড)

Dipu Monir Department, the Right to Information Act, the
Dipu Moni 's world record
report and notified sapharasuci, according to the members of parliament have been foreign minister in the most important responsibility of getting (and 2009 in February 1st from foreign tour began), the last 54 months (10 July, the 2013 up to) 187 T tour has.
Dipu Moni spent almost 600 days out of the country at this time. Traveling abroad, it's a state nayai, Asia, Europe, America, and the foreign ministers reached the. India's former Foreign Minister SM Krishna and Pakistan's newly hina rabbani khara could be that none of the 100 foreign tour. Outgoing U.S. Secretary of State Hillary Clinton four years in 112 countries over the period of 306 days spent on the ground overseas. Many of his purbasuridera 25-30 days of continuous abroad, but there is no record of karai spent 400 days abroad. I have broken the record for the highest number of tenure of the Foreign Minister of Bangladesh. Alliance gloss cabinet members were going to build the new record. Dipu Moni!

বাংলা
দীপু মনির দপ্তর, তথ্য অধিকার আইনে প্রদত্ত বিবরণী ও ঘোষিত সফরসূচি মতে, প্রথমবার সংসদ সদস্য হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেয়ে (২০০৯ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি থেকে বিদেশ সফর শুরু করেন) গত ৫৪ মাসে (১০ই জুলাই, ২০১৩ পর্যন্ত) ১৮৭টি সফর করেছেন তিনি। এই সময়ে প্রায় ৬০০ দিন দেশের বাইরে কাটিয়েছেন দীপু মনি। বিদেশ সফরে প্রতিবেশী কোন রাষ্ট্র তো নয়ই, এশিয়া, ইউরোপ আমেরিকার প্রভাবশালী পররাষ্ট্রমন্ত্রীদেরও ছাড়িয়ে গেছেন তিনি। ভারতের সদ্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস এম কৃষ্ণা কিংবা পাকিস্তানের হিনা রব্বানি খার কেউই বিদেশ সফরে ১০০ পার হতে পারেনি। সদ্য বিদায়ী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন চার বছর মেয়াদে ১১২ দেশ সফরে গিয়ে ৩০৬ দিন বিদেশের মাটিতে কাটিয়েছেন। তার পূর্বসূরিদের অনেকে ২৫-৩০ দিন পর্যন্ত একটানা বিদেশ সফর করলেও কারই ৪০০ দিনের বেশি বিদেশে কাটানোর রেকর্ড নেই। এক মেয়াদে সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশ সফর করে সবার রেকর্ড ভেঙেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নয়া রেকর্ড গড়তে যাচ্ছেন মহাজোটের চমক মন্ত্রিসভার প্রভাবশালী সদস্য ডা. দীপু মনি!
http://www.mzamin.com/archive_details.php?nid=NjI5NjY=&ty=MA==&s=MTg=&c=MQ==&seco=MjAxM3w3fDE3fDA= 

Sunday, July 14, 2013

এ বক্তব্য আহমদ শফীর নয়।এমন কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানায় না : নাটক সাজিয়ে ইসলামকেই টার্গেট করা হচ্ছে।

এ বক্তব্য আহমদ শফীর নয়।এমন কথা প্রধানমন্ত্রীর মুখে মানায় না : নাটক সাজিয়ে ইসলামকেই টার্গেট করা হচ্ছে।
ইনকিলাব রিপোর্ট : হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর কথিত একটি বক্তৃতার উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতপরশু কিছু আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত এ মন্তব্যে দেশ-বিদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রধানমন্ত্রী আল্লামা শফীর কথিত মন্তব্যকে জঘন্য ও নোংরা বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আল্লামা শফীকে উদ্দেশ্য করে বেগম খালেদা জিয়ার সাথে তার বৈঠক নিয়েও অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ টিপ্পনী কেটে অশোভনীয় মন্তব্য করেন। বিষয়টি ছিল গতকালের টক অব দ্যা কান্ট্রি। হঠাৎ করে মিডিয়ায় এ নিয়ে ব্যপক প্রচার, তথাকথিত প্রগতিশীল ইসলাম বিদ্বেষী মানুষগুলোর ‘সরবতা’ রহস্যজনক মনে করছে সাধারণ মানুষ। আহমদ শফীর তথাকথিত বক্তৃতার ভিডিও চিত্র নিয়ে এ হৈচৈ এর নেপথ্যে কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে তা এখনো রয়ে গেছে অজানা। কারণ অনেকেই বলতে শুরু করেছেন দেশের নারী সমাজকে ক্ষেপিয়ে তুলে সরকার ‘হেফাজত’কে সাইজ করতে চাচ্ছে।
ওমরাহ উপলক্ষে সউদী আরব সফররত আল্লামা আহমদ শফীর সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার ব্যক্তিগত সচিবের মাধ্যমে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, তিনি কখনো তার কোন বক্তৃতার ভিডিও করেন নি বা বাজারেও ছাড়েন নি। অন্য কেউ বিনা অনুমতিতে ভিডিও করলে, এতে সুপার ইম্পোজ করে কথা, ছবি, শব্দ বা দৃশ্য সংযোজন, বিকৃতি কিংবা পরিবর্তন করলে এর দায়িত্ব তার নয়। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সম্পর্কে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হন নি। তিনি পবিত্র রমজান মাসে সকলের প্রতি আল্লাহকে ভয় করে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, নিশ্চয়ই আমাদের প্রত্যেককে নিজেদের কথা, কাজ ও আচরণের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। ভিডিওতে প্রচারিত তার বক্তব্যের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। প্রধানমন্ত্রী আমার উদ্দেশ্যে যা কিছু বলেছেন, এর কোন জবাব আমি দিতে চাই না। গোটা বিষয়টিই আমি মহান আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি। আমার ব্যাপারে যারা যত মন্তব্য করছেন, সব কিছু তারা নিজ দায়িত্বেই করছেন। এ সবের সত্য-মিথ্যা বা ভুল-শুদ্ধের দায়ও তাদেরই বহন করতে হবে। আমি আবারও বলবো, সংজমের রমজান মাসে সকলেই আল্লাহকে ভয় করে চলুন। কথায় ও কাজে সংযমী হোন।
রাজধানীর হযরত খাদিজাতুল কোবরা (রাদি.) মহিলা মাদরাসার প্রধান মুহাদ্দিস শেখ জান্নাত আরা নূরী বলেন, আল্লামা আহমদ শফী সম্পর্কে নারীনেত্রী, মুখচেনা কিছু বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিকদে আক্রমনাত্বক বক্তব্য তাদের অন্তজর্¦ালারই বহিঃপ্রকাশ। নাস্তিক-মুরতাদদের ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে দিয়েছে বলেই হেফাজতের ওপর তারা এত ক্ষিপ্ত। সরকারের জনপ্রিয়তা হিমাংকের নীচে চলে যাওয়ার কারণও এই হেফাজত। নিরীহ আলেম নির্যাতন ও গভীর রাতে আলো নিভিয়ে শাপলা চত্বরের নজিরবিহীন নৃশংসতার খেসারত দিয়ে সরকার এখন দেউলিয়া। এমন সময় প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়েই ইসলামবিদ্বেষী চক্র উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের সম্মানিত আমিরের বিরুদ্ধে কুৎসা রটাচ্ছেন; বক্তৃতার নাটক সাজিয়েছে। এতে তারা সরকারের তল্পিবাহক কিছু মিডিয়াকে ব্যবহার করছেন। আহমদ শফীর অনুপস্থিতিতে তাকে ঘায়েল করার সম্মিলিত চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। এ ষড়যন্ত্রের সাথে প্রধানমন্ত্রীকেও কুচক্রীরা জড়িয়ে তার ইমেজের মারাত্মক ক্ষতি করার চেষ্টায় সফল হলো বলে। মহাজোট নেত্রীর মন্তব্য অত্যন্ত অশোভনীয় ও কুরুচিপূর্ণ। একজন প্রবীণ আলেমকে নিয়ে তার হিংসাত্মক উক্তি সরকারের জনপ্রিয়তাকে আরো পাতালমুখী করে দিয়েছে। আমরা আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার না করে সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধনের মাধ্যমে হারানো জনপ্রিয়তা অর্জনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে মনোযোগী হতে বলব। আমাদের দাবি থাকবে, আল্লাহর উপর পুনরায় আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করে তারা যেন ১৩ দফা মেনে নেন। তাহলে পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার পথ সুগম হবে।
বেসরকারী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মনির মাহদী জুুয়েল বলেন, আল্লামা শফীর কথা নোংরা ও জঘন্য হলে আমাদের তাহলে সুস্থ ও পবিত্র কথা শেখার জন্য সংসদের ভাষা শিখতে হবে। সুন্দর মন্তব্য ও সুশোভন উক্তি শিখতে হবে আওয়ামী লীগের মুখরা এমপি ও তুখোড় নেতা নেত্রীর কাছ থেকে। আল্লামা শফীর কথার প্রতিবাদ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী যা বলেছেন, তা তো আরো বেশি জঘন্য। হজরত শাহজালাল (রহ.) ইসলামিক রিসার্চ কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী নূর মোহাম্মদ এ প্রসঙ্গে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর কথিত বক্তৃতার কিছু অংশ নিয়ে দেশে চলছে তুলকালাম কা-। পবিত্র রমজানুল মুবারকে তিনি যখন পবিত্র ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে সউদী আরব অবস্থান করছেন ঠিক তখনই ইউটিউবে ছেড়ে দেয়া হয়েছে তার একটি বক্তৃতা। প্রথমত এর হাতে লেখা কপি রাজধানীর নামগোত্রহীন কিছু কাগজে ছেপে দেয়া হয়। এরপর শুরু হয় নিন্দা ও প্রতিবাদমূলক বিবৃতির ঝড়। বক্তৃতাটি মানুষের চোখে পড়ার আগেই ৬৬টি বেসরকারী সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠনের সমন্বি^ত শিরোনাম সামাজিক প্রতিরোধ আন্দোলন সংবাদপত্রে বিবৃতি দেয়। এসব সংগঠনের হয়ে বিবৃতিটি প্রচার করেন নারীনেত্রী আয়শা খানম। এরপর একটি ইংরেজি দৈনিক সংবাদটি অস্বাভাবিক গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে। পাশাপাশি বেসরকারী টিভি চ্যানেলে শুরু হয় প্রচারণা। বিস্ময়কর দ্রুত অনুষ্ঠিত হতে থাকে অসংখ্য মানববন্ধন ও অগণিত ননস্টপ টকশো। সংশ্লিষ্টদের অস্বাভাবিক আচরণে মানুষ সন্দেহ করে যে, এ প্রচারযজ্ঞ নিশ্চয়ই পূর্ব পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। মনে হয় এ নাটক আগেই সাজিয়ে রাখা হয়েছিল। অজ্ঞাত তারিখ ও স্থানের ভিডিওতে দেখা যায় আল্লামা আহমদ শফী ওয়াজ করছেন। তার কণ্ঠ নকল করে কেউ কিছু বলছে না কি কোন রেকর্ড করা বক্তৃতার সাথে তিনি কণ্ঠ মেলাচ্ছেন-এর কোনটাই দর্শকের সামনে স্পষ্ট নয়। কারসাজি করে তোলা ভিডিওতে তিনি যেমন অস্পষ্ট, তার কণ্ঠস্বরে টানা আলোচনার ফাঁকে সংযোজিত উদ্দেশ্যমূলক নানা উক্তিও একই কায়দায় জুৎকরে সাজানো।
আল্লামা আহমদ শফীর ৯৪ বছর বয়সী কণ্ঠস্বর যারা সরাসরি শুনে অভ্যস্থ তাদের অনেকের সাথে কথা বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ইউটিউবে ছেড়ে দেয়া এ বক্তব্য আল্লামা আহমদ শফীর নয়। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মুফতি ইজহারুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আল্লামা আহমদ শফীর আলোচনা, ওয়াজ ও শ্রেণিকক্ষের পাঠ চট্টগ্রামের মানুষ এবং সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা তার শত সহস্র ছাত্র-ভক্ত সারাজীবনই শুনে এসেছেন। ৭০/৮০ বছর যাবত তিনি ইসলাম প্রচারে বহু আলোচনা করেছেন। তার কথাবার্তা, ওয়াজ, উপমা শুনে মানুষ অভ্যস্ত। তিনি কোন অশালীন উক্তি করতে পারেন, এটা তার শত্রুও বিশ্বাস করবে না। প্রযুক্তির ব্যবহারে কেউ হীন উদ্দেশ্যে যদি কারসাজি করে থাকে তাহলে এক সময় এটা প্রকাশ পাবে। যারা এ ভিডিও দেখে অহেতুক বিরূপ মন্তব্য করছেন, তারা তখন লজ্জা পাবেন। প্রধানমন্ত্রীও কুচক্রীদের সাজানো ফাঁদে পা দিয়ে তার পিতার বয়সী দেশবরেণ্য এই আলেম ও শায়েখকে লক্ষ্য করে অশোভনীয় মন্তব্য করার জন্যে অনুতপ্ত হবেন।
হেফাজতে ইসলামের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে গত ১৪ জুলাই এ বক্তব্যটি সম্পর্কে যেসব ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে এ নিয়ে কথা হয় হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা  মাওলানা সাখাওয়াত হোসেনের সাথে। তিনি ইনকিলাবকে বলেন, আমাদের আমির দেশে নেই। তিনি ওমরায় থাকাবস্থায় যারা এ বক্তৃতাটি প্রচার করছে তাদের উদ্দেশ্য ভাল না। সুপরিকল্পিতভাবে পবিত্র রোজার মাসে উদ্দেশ্যমূলক এই প্রচারণা জনগণ ভালোভাবে নিচ্ছে না। মুহতারাম আমির দেশে ফিরলে আমরা অফিসিয়াললি মন্তব্য করতে পারব। তবে বক্তব্যটি যে সাজানো এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে দুষ্ট এতে কোন সন্দেহ নেই। কেননা, আল্লামা শফী বিদেশে যাওয়ার পর এটি অসমর্থিত সূত্রে ইউটিউবে প্রচার, পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট, শত সহস্র কণ্ঠে নিন্দা ও প্রতিবাদ, টিভি টকশো তে অস্বাভাবিক হায়-মাতম, এনজিও ও নারীবাদীদের ঐকতান, চিহ্নিত নাস্তিক-মুরতাদ গোষ্ঠীর বাকযুদ্ধ আর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মুখে মারাত্মক অশোভনীয় মন্তব্য- সব মিলিয়ে যে কোন মানুষ বুঝে নেবে যে, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়। এটা তো তিলকে তাল বানানো বললেও হবে না, বলতে হবে তিলকে হাতি বানানোর অপচেষ্টা। আমিরের কোন পুরনো ওয়াজের ছবিতে অন্যের কথা ও প্রক্রিয়াকৃত কণ্ঠস্বর জুড়ে দিয়ে তৈরি এই ভিডিও সহসাই অপপ্রচারকারীদের জন্য বিশাল লজ্জা ও অনুতাপের কারণ হবে বলে আমার বিশ্বাস। তবে হেফাজতের কোন নেতা যদি এর কোন ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন তা তাদের সরল বিশ্বাস থেকে উৎসারিত। প্রযুক্তির অপব্যবহারে এমন জালিয়াতিও যে নাস্তিক-মুরতাদরা করতে পারে সে ধারণাই তারা করেন নি। হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমিরে শরীয়ত আল্লামা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফের মতে, এটি কোনঠাসা নাস্তিক-মুরতাদ ও জনঅসন্তোষের শিকার মহাজোটের একটি সাজানো নাটক। রমজান মাসে ওমরা পালনরত একজন বর্ষীয়ান মুরব্বী আলেমকে অন্যায়ভাবে গালমন্দ করে নিজের দুনিয়া ও আখেরাত বরবাদ করা কারো জন্যই উচিত হবে না। প্রধানমন্ত্রী আল্লামা শফী সম্পর্কে যে কটূক্তি করেছেন তা অবিলম্বে ফিরিয়ে নিন, একজন নিরাপরাধ বুযুর্গকে জনগণের সামনে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হেয় করার পরিণাম শুভ হতে পারে না। বিভ্রান্তি ছড়িয়ে, মানুষের মাঝে ইসলামবিদ্বেষ সৃষ্টির অপচেষ্টা  সফল হবে না। মিথ্যা ও অপপ্রচার দিয়ে কেউ কোনদিন সফল হয় না।
বেগমগঞ্জ জামে মসজিদের খতিব ও জামি‘আ ইসলামিয়ার শায়খুল হাদিস আল্লামা মুফতি নুরুল আমিন ইনকিলাবকে বলেন, এ বক্তব্য আল্লামা শফীর হতে পারে, তা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। তিনি নিজে কওমী মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান। তার বোর্ডের আওতায় শত শত মহিলা মাদরাসায় মাস্টার্স পর্যায়ে (দাওরায়ে হাদিস-তাকমীল) মেয়েরা পড়ছে। তিনি কেন মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার বিরুদ্ধে বলতে যাবেন? প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য শুনে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি। আল্লামা শফী বেগম জিয়ার সাথে কোনদিনই বসেননি, তিনি অন্তত দুইবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে বসেছেন। নারীর পাশে বসলে মুখে লালা আসার প্রসঙ্গ প্রধানমন্ত্রী কি করে উচ্চারণ করতে পারলেন, তা আমরা ভেবে পাই না। আল্লামা শফীর বক্তব্য জঘন্য হলে, পিতার বয়সী এই মহান দরবেশ ব্যক্তিটির প্রতি প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্যটি কী? যেখানে তিনি বলেছেন, বেগম জিয়ার কাছে বসার সময় কি আহমদ শফীর লালা ঝরেছিল (নাউজুবিল্লাহ)। একজন নবতিপর বৃদ্ধ বুযুর্গ আলেম, দেশ-বিদেশে পরিচিত স্বনামধন্য আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে এমন কটূ ও কুরুচিপূর্ণ উচ্চারণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করতে পারেন বলে আমাদের বিশ্বাস হয় না। তিনি বেগম জিয়ার পাশে আল্লামা আহমদ শফীকে কল্পনায় বসিয়ে যে রস করেছেন তা তার উচ্চপদের জন্যে মোটেও শোভনীয় নয়। আল্লামা শফীর বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ভিডিও ও বক্তব্য নিয়ে কটূ মন্তব্য না করে, যারা এ ভিডিও তৈরি করে সরকার ও সরকার প্রধানকে প্রতারিত করেছে সেসব অতিউৎসাহী দালাল ও চামচাদের রিমান্ডে নিয়ে আসল কথা বের করা উচিত। এরা প্রধানমন্ত্রীকে আরো নিন্দিত, ধিকৃত ও অজনপ্রিয় করার উদ্দেশে বন্ধু বেশে শত্রু। হেফাজতের উপর নৃশংসতার ফলে যে ক্ষতি সরকার মোকাবেলা করতে হিমশিম খাচ্ছে, এই ভিডিও নাটক এরচেয়ে আরো গভীর ও মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনবে বলে মানুষ মনে করছে। পবিত্র রমজান মাসে এতবড় একজন বুযুর্গ আলেমসহ দেশের সকল আলেম, ইমাম, মুফতি ও মুরব্বীদের সাথে; এমনকি ইসলামী বিধি-বিধানের সাথে একশ্রেণির চিহ্নিত বুদ্ধিজীবী, নারীনেত্রী ও রাজনীতিকের সীমাহীন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ দেশ ও জাতির ভাগ্যে কোন মন্দ পরিণতি ডেকে আনে কিনা, এ নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। আমরা সবাইকে সংযত হতে বলব।

http://www.dailyinqilab.com/details_news.php?id=120541&&+page_id=+5