হেফাজতের কর্মকাণ্ড নজরদারির নির্দেশ৷
হেফাজতে ইসলামের কর্মকাণ্ড ও গতিবিধি নজরদারিতে রাখতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনী ও গোয়েন্দাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে শহীদ ও নিখোঁজ
মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার শান্তি কামনায় আগামী ৪ অক্টোবর ঢাকায় জয়কালী
মন্দিরে গণশ্রাদ্ধ অনুষ্ঠান আয়োজনকে নিরুৎসাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গত রবিবার
আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড.
মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী সাহারা খাতুন, শ্রম ও
কর্মসংস্থানমন্ত্রী রাজি উদ্দিন আহমেদ রাজু, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
শামসুল হক টুকু, আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, র্যাবের মহাপরিচালক
মোখলেছুর রহমান, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ ও বিভিন্ন
গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে
প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন,
'হেফাজতে ইসলামের তৎপরতা সম্পর্কে খোঁজখবর রাখাটা গোয়েন্দা সংস্থার
দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। হেফাজত কোন ধরনের আন্দোলন করছে, তা জনস্বার্থের
বিরুদ্ধে যাচ্ছে কি না এসব দেখা হচ্ছে। তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলন করলে বাধা
দেওয়া হবে না। তবে আগের মতো সহিংসতার দিকে এগোলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। সর্বোপরি হেফাজতে ইসলাম একটি অরাজনৈতিক
সংগঠন। তারা রাজনৈতিক কোনো আচরণ করবে না এমনটাই আশা করি।'
বৈঠকে
উপস্থিত থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, হেফাজত কী ধরনের
আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করছে সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে গোয়েন্দা
কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হেফাজত আইনের ভেতরে থেকে কোনো কর্মসূচি
পালন করতে চাইলে সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে সবাই একমত পোষণ করেছেন। তাদের পক্ষ
থেকে কোনো দাবি-দাওয়া নিয়ে স্মারকলিপি দিতে চাইলে তাও গ্রহণ করা হবে।
গণতান্ত্রিক সব অধিকার তারা ভোগ করতে পারবে। তবে স্মারকলিপি দেওয়ার
ক্ষেত্রে চার-পাঁচজনের বেশি লোককে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া
হবে না।
সভায় হেফাজতের সচিবালয় ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণার বিষয়টিও
আলোচনায় আসে। হেফাজতকর্মীরা ঘেরাওয়ের উদ্দেশ্যে যাতে সচিবালয়ের দিকে যেতে
না পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গণশ্রাদ্ধ আয়োজনকে নিরুৎসাহিত করা হবে :
মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও নিখোঁজদের পরমাত্মিক মুক্তি কামনায় আগামী ৪ অক্টোবর
ঢাকায় জয়কালী মন্দিরে গণশ্রাদ্ধের আয়োজন নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। অনুষ্ঠানটি
আয়োজনে সংশ্লিষ্টদের নিরুৎসাহিত করার পক্ষে সভায় কেউ কেউ মতামত দেন।
গোয়েন্দা
সূত্র জানায়, আইনশৃঙ্খলা সভার এই বৈঠকের কয়েক দিন আগে গণশ্রাদ্ধ
অনুষ্ঠানটির ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, সরকারের শেষ সময়ে এসে এ ধরনের অনুষ্ঠান হলে ধর্মীয়
অনুভূতিকে পুঁজি করে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ফায়দা লোটার চেষ্টা চালাতে
পারে। এ কারণে অনুষ্ঠানটি আয়োজানের বিষয়টি বিবেচনার কথা বলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট
সূত্র জানায়, গণশ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানটিতে যোগ দিতে সারা দেশের পাশাপাশি অন্য
দেশ থেকেও হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিতরা আসার কথা রয়েছে। এ অবস্থায়
অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এই আয়োজনকে নিরুৎসাহিত করার পক্ষে মতামত
দেওয়া হয়েছে।
No comments:
Post a Comment