সিলেটে অবুঝ শিশুর নামে মামলা।
মায়ের কোলে চড়ে আদালত থেকে জামিন পেয়েছে ১৪ মাসের এক শিশু। রোববার সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান চৌধুরীর আদালত শিশুটিকে জামিন প্রদান করেন। মায়ের কোলে চড়ে এসে জামিন আবেদন করলে আদালত এ জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। পাশাপাশি আদালত বাদীকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির হয়ে শিশুর বিরুদ্ধে মামলা করার কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। নোটিশ পেয়ে সোমবার বিকালে আদালতে হাজির হয়ে শিশুর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন মামলার বাদী স্যানেটারি ইন্সপেক্টর সামছুদ্দিন। আদালত মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৯ অক্টোবর নির্ধারণ করেন। বাদীকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেয়া হয়।
জামিনপ্রাপ্ত শিশু-আসামি কোম্পানীগঞ্জ থানার ছনবাড়ি নোয়াকুট গ্রামের ইন্তাজ আলীর ছেলে আফতাব আলী তার বয়স মাত্র ১৪ মাস। ১৪ মাসের একটি শিশুর আদালতে হাজির হয়ে জামিন নেয়ার বিষয়টি শহর থেকে গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা যায়, খাদ্যপণ্যের গুণগতমান নিয়ন্ত্রণ ও ভেজাল প্রতিরোধের লক্ষ্যে চলতি বছরের ২৭ ফেব্র“য়ারি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরফিন বাজারের আফতাব স্টোরে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্যানেটারি ইন্সপেক্টর সামছুদ্দিন। এ সময় দোকান থেকে সরিষার তেলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকা মহাখালীর জনস্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে পাঠানো হয়। তেলে ভেজাল প্রমাণিত হওয়ায় সিভিল সার্জন সিলেটের মাধ্যমে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোম্পানীগঞ্জ আদালতে ইন্সপেক্টর সামছুদ্দিন বাদী হয়ে আফতাব মিয়ার নামে ভেজাল খাদ্য বিক্রয়ের অপরাধে বিশুদ্ধ খাদ্য অধ্যাদেশ আইনের ৬(১) ধারায় অভিযোগ দাখিল করেন। আদালতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯ আগস্ট আসামি আফতাব আলীর নামে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে সমন জারি করে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। রোববার হাজির হওয়ার তারিখ ছিল। দোকানটি আফতাবের নামে হওয়ায় তাকে মামলার আসামি করা হয়।
আসামি পক্ষের আইনজীবী অশেষ কর বলেন, দোকানের মালিক আফতাবের বাবা। তিনি তার নামে ইউনিয়ন থেকে ট্রেড লাইসেন্সও বের করেছেন। তার নামে ইউনিয়ন করও দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু একটি শিশুর বিরুদ্ধে মামলা হতেই পারে না। এটা হয়রানি ছাড়া কিছুই নয়। আফতাবের বাবা ইমতাজ আলী বলেন, আমার সন্তানের বিরুদ্ধে মামলার সমন যাওয়ায় আমি অবাক হয়েছি। শুধু তার নামে দোকান দিয়েছিলাম বলে একটি অবুঝ শিশুর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment