Tuesday, April 15, 2014

দেখে নিন সেন্টমার্টিন দ্বীপ এর ভয়ংকর সেই মৃত্যুফাঁদ ( ভিডিও সহ সতর্কতামূলক পোস্ট)

বেশ কয়েকবছর আগে আমাদের কাছের এক বড় ভাইয়ার এক বন্ধু মারা যান সেন্টমার্টিন দ্বীপ এ পানিতে ডুবে। সব বন্ধু পাড়ে দাঁড়িয়ে আছে আর চোখের সামনে মায়াবী সেন্টমার্টিন দ্বীপ এ নীল পানি গ্রাস করে নিচ্ছে কাছের বন্ধুকে !! ভাবতেই গা শিউরে উঠে।
এরপর যখন আমরা কয়েকটা বন্ধু মিলে সেন্টমার্টিন দ্বীপ এ যাই তখন কথাটা খুব মনে হচ্ছিল!! যাওয়ার পথেও অনেকের কাছেই শুনলাম এরকম হারিয়ে যাওয়ার কিছু সত্য গল্প। অবাক করা বিষয় হচ্ছে বর্ননায় সবার বলা জায়গাটা একটাই মনে হচ্ছিল। তাই ওখানে গিয়ে আমরাও খুজতে লাগলাম জায়গাটি।।
স্থানীর এক হোটেল কর্মকর্তার সাথে এসব নিয়ে কথা হচ্ছিল , কথা প্রসঙ্গে উনিও জায়গাটা দেখিয়ে দিয়েছিলেন, আর তানা হলে হয়ত আজ আর আমার এই পোস্ট টি লেখা হতনা হয়ত অন্যদের মত আমরাও হারিয়ে যেতাম সেখানে কারন জায়গাটা সেন্টমার্টিন নেমে প্রথম বীচে হাটা শুরু করলেই কয়েক মিনিট পরেই ওত পেতে থাকে অর্থাৎ অনেক কাছেই।
ওখানকার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে হতে কিছু বুঝে উঠার আগেই হয়ত ভুলবশত আপনিও পা দিতে পারেন এই জায়গাটিতে!! কারন নীল পানির আচ্ছাদনে আলাদা করে বোঝার কোণ উপায় ই নেই।
আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার প্রকৌশল বিভাগের সেই ৩৪ জনের মধ্যে একজন রাফিউজ্জামান সিফাত। নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাসে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় নিজের বন্ধু হারানোর জন্য তিনি দায়ী করেছেন সেন্টমার্টিনের স্থানীয় প্রশাসন ও কোস্ট গার্ডের চরম দুর্বলতা কে। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু এখানে দেয়া হল-
এরপরেও প্রায় প্রত্যেক বছর এই একি জায়গায় অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন আর এবার ২০১৪ তে এসে আহছান উল্লাহ ইউনিভার্সিটির এতগুলো ছাত্র অকালে প্রাণ হারালো !! খুব নাড়া দিয়ে উঠলো  আর ধিক্কার দিতে ইচ্ছে করতেছে আমাদের নিষ্ঠুর বিবেক কে, এতটা নিশ্চিত জানা সত্তেও ওখানকার প্রশাসন কোণ ব্যবস্থা নেয়নি এই অভিশপ্ত জায়গা সম্পর্কে !!
যাহোক কথা না বাড়িয়ে আমি আপনাদের কে জায়গাটা একটূ ছবি দিয়ে দেখিয়ে দিতে চাচ্ছি।।
যার গেছেন তারা নিশ্চই জানেন যে প্রথমে জাহাজে করে সবাইকে সেন্টমার্টিন ফেরীলাইনে নামিয়ে দেয়া হয়। আর সেখান থেকে পায়ে হেটে ব্রীজটা পার হয়ে এসে নামতে হয় সেন্টমার্টীন দ্বীপে।

এখানে নামলেই হাতের ডানদিকে যে বীচ টা দেখতে পাই প্রায় বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সবাই এই বীচ ধরে হাটি এবং ব্রীজের গোড়ার দিক থেকে পানিতে নামি আর কিনারা ঘেষে ডান দিকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকি।।
পানিতে একবার নেমে পড়োলে আমরা আর কেউই কিন্তু বালিতে উঠে আসিনা সামনে এগুতে থাকি পানি ধরেই। ঠিক সোজা সামনের দিকে এগিয়ে গেলে এবার দ্বীপটা হাতের বা দিকে টার্ন নেয়। ঐ জায়গাকে বলা হয় “জিনজিরা উত্তরপাড়া” স্থানীয়রা বলেন উত্তর বীচ।।
দুইদিকের পানির স্রোত এবং ঐ ত্রিকোনাকৃতির মধ্যস্রোত এই জায়গাটিতে মিলিত হয়েছে এবং ত্রিমুখি স্রোতের কারনে পানির চাপ খুব বেশী ওখানটায় এবং চাপটা নিন্মমুখি।

স্থানটা দেখতে অনেকটা লম্ভাটে খালের মত, আর এই ত্রিমুখি স্রোতের কারনে অনেক জায়গাজুড়ে বড়সড়ো গর্ত তৈরী হয়েছে। জানিনা এবং কোন নির্দেশনা নেই বলেই আমরা সাতার কাটতে কাটতে এই টার্ন দিয়েই বা পাশের বীচের দিকে এগুতে থাকি, আর তখনি কিছু বুঝে উঠার আগেই সমুদ্রের অতলে হারিয়ে যায় অনেকেই

Frownএকিভাবে আমি এবং আমার বন্ধু জাকির ও রিয়াদ সাতার কেটে ওইদিকেই এগুচ্ছিলাম হঠাত ওখানে বীচে হাটাহাটি করা স্থানীয় দুইটা বাচ্ছা ছেলে আমাদের কে বললো ‘ভাইয়া ওইদিকে যাইয়েন না, গর্ত আছে’ আর হয়ত এভাবেই আল্লাহ আমাদের বাঁচিয়েছেন !!
প্লিইজ সবার কাছে অনুরোধ রইলো এই স্থানটা সম্পর্কে আপনার কাছের সবাইকে সচেতন করে দিন। ছবিগুলো ফোনে নিয়ে নিন যখন যার সাথে কথা হবে দেখিয়ে দিন, যদি আর একটি প্রাণ ও বাঁচে আপনার এই ছোট্র কাজ থেকে তাহলে অনেক বেশী উপকৃত হবেন।। বুঝার সুবিধার্থে আমাদের ক্যামেরায় তোলা কিছু ছবি দিচ্ছিঃ

ফেরী লাইনের ব্রীজে দাঁড়িয়ে তোলা ছবি।।

ব্রীজ থেকে নেমে তোলা সেই একি জায়গার ছবি। জায়গাটার নাম উত্তর বীচ।
 
রিপ কারেন্ট বা উলটো স্রোত (ভিডিও)

2 comments:

  1. নিউজ ডেস্কঃ সেন্টমার্টিনের অসম্ভব সুন্দর নীল পানির সমুদ্র সৈকতের কিছু অংশে লুকিয়ে আছে ‘ভয়াল মৃত্যু ফাঁদ’। সাম্প্রতিক সময়ে আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রের করুণ পরিণতির পরে সেন্ট মার্টিনের সমুদ্র সৈকত নিয়ে আলোচনা তৈরি হয়েছে।

    সেন্ট মার্টিন ঘুরে আসা পর্যটক এবং কোস্টগার্ড সূত্রে জানা গেছে, সেন্ট মার্টিন দ্বীপের উত্তর দিকে ‘ত্রিকোণ’ বিশিষ্ট এলাকাতে অবস্থান সেই মৃত্যু ফাঁদের। স্থানটা দেখতে অনেকটা লম্বাটে খালের মতো, আর এই ত্রিমুখি স্রোতের কারনে অনেক জায়গাজুড়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরী হয়েছে। (ছবিতে চিহ্নিত)

    জাহাজ ঘাট থেকে নামার পথে হাতের ডানদিকে ওই স্থান, উত্তর পাড়া নামে স্থানীয়দের কাছে পরিচিত

    এ ব্যাপারে সেন্ট মার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, আমরা সৈকতের ওই স্থানের কথা জানি, কিন্তু আগত পর্যটকরা বিষয়টি না জানার ফলে ওইসব দূর্ঘটনা ঘটছে। স্থানীয়ভাবে আমাদের যা করা দরকার আমরা চেষ্টা করবো, কিন্তু সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।

    স্থানীয়রা ওই এলাকাতে পর্যটকদের যেতে প্রায়ই নিষেধ করে, কিন্তু সব সময় স্থানীয়রা সাবধান করতে পারে না এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা না থাকায় প্রায়ই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা।

    সেন্ট মার্টিনের পর্যটন শিল্পের প্রসার এবং পর্যটকদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি মহলকে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে সাম্প্রতিক প্রাণহানির ঘটনার পর।

    ReplyDelete